ফের বোরখা বাধ্যতামূলক আফগানিস্তানে। ছবি: রয়টার্স।
হিজাবে চলবে না। জনসমক্ষে পরতে হবে বোরখা। নয়া ফতোয়ায় আফগান মহিলাদের এ কথা জানিয়ে দিল তালিবান। ঘোষণাপত্র জারি করে তালিবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা বলেছেন, ‘আফগান মহিলাদের ঐতিহ্যবাহী চাদরি (মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা বোরখা) পরা উচিত। কারণ সেটাই তাঁদের সম্মানের সঙ্গে মানানসই।’
এমনকি, পুরুষ আত্মীয়দের সামনে আসার সময় আফগান নারীদের শরিয়ত মেনে মুখ ঢাকারও নির্দেশ দিয়েছেন তালিবান সর্বোচ্চ নেতা। তবে বয়স্ক মহিলা এবং শিশুকন্যাদের এ ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে আখুন্দজাদার ‘পরামর্শ’, ‘যদি বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কোনও কাজ না থাকে, তবে মহিলাদের বাড়িতে থাকাই ভাল।’
প্রসঙ্গত, গত অগস্টে তালিবানের কাবুল দখলের পর সংগঠনের আন্তর্জাতিক মুখপাত্র সুহেল শাহিন কাতারের দোহায় সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, অতীতের মতো বোরখা নিয়ে কড়াকড়ি হবে না। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বোরখা একমাত্র আবরণ নয়। তার বাইরেও অন্য ধরনের হিজাব রয়েছে।’’ কিন্তু সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতা বুঝিয়ে দিলেন, ফের বোরখা-বিতর্কে অতীতের পথেই হাঁটবেন তাঁরা।
এর আগে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পূর্বতন তালিবান সরকারের আমলে আফগানিস্তানে মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। মহিলাদের চাকরি করা, বেড়াতে যাওয়াও নিষিদ্ধ ছিল। সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা বোরখা পরে তবেই বাইরে বেরনো যেত। পা পর্যন্ত ঢাকা এবং পাতলা কাপড়ের আচ্ছাদনে মুখ ঢাকা যে পোশাক, তাকে বোরখা বলা হয়। শুধুমাত্র কাঁধ, গলা এবং মাথা ঢাকা হয় যে কাপড়ে, তাকে বলা হয় হিজাব।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার সময়ে গোটা বিশ্বকে তালিবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, গত বারের থেকে অনেক বেশি ‘উদার’ নীতি নিয়ে দেশ শাসন করবে। কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে, আসল ছবিটা বিশ্বের সামনে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে। সরকার গড়ার পরেই মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার উপরে কোপ পড়েছে। সরকারি চাকরি থেকেও বাদ পড়েছেন মহিলারা। গত সপ্তাহে মহিলাদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হেরাট-সহ বেশ কয়েকটি প্রদেশের তালিবান সরকার।