মায়ানমারে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স।
আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে মায়ানমারে। সেনার সঙ্গে সঙ্ঘর্ষে শুধুমাত্র বুধবারই ৩৮ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে সে দেশে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ শাখা। ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথম বার এক দিনে এত জন প্রতিবাদীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
গত ৪ সপ্তাহ ধরে মায়ানমারের রাস্তায় কাতারে কাতারে মানুষ গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনে নামছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক শহরে রাস্তায় ভিড় করছেন নাগরিকেরা। পাল্টা প্রতিরোধ করছে পুলিশ ও সেনা। সংঘর্ষে প্রতি দিনই কমবেশি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। সেনা ও পুলিশ কোথাও গুলি চালাচ্ছে, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটাচ্ছে, তবুও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না আন্দোলনকারীদের।
এর আগে গত রবিবারে চরম আকার ধারণ করেছিল এই আন্দোলন। সে দিন ১৮ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। রবিবার পর্যন্ত এক দিনে মৃত্যুর সেটিই ছিল সর্বোচ্চ সংখ্যা। কিন্তু বুধবারের পরিসংখ্যান সেই দিনকেও ছাড়িয়ে গেল। রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৫০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আটক করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ জন প্রতিবাদীকে। আটকদের পরিবারের দাবি, কোথায়, কী ভাবে বন্দিদের রাখা হচ্ছে, তা কেউ জানেন না।
প্রথম থেকেই প্রতিবাদীরা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছেন। পাশাপাশি মায়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মুখ আউং সাং সু চি-কে অবিলম্বে মুক্ত করার দাবি জানানো হচ্ছে। মায়ানমারের সেনার সমালোচনা শুরু হয়েছে সারা পৃথিবী জুড়েই। মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। সে দেশের সেনাকে অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করতেও আবেদন জানিয়েছে একাধিক দেশ।
দু’দিন আগেই শান্তি ফিরিয়ে আনার আবেদন করে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, অবিলম্বে যেন রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয় ও হিংসার পরিবেশ বন্ধ করা হয়। সাপ্তাহিক ভাষণে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমি পৃথিবীর সমস্ত দেশকে আবেদন জানাই, তাঁরা যেন মায়ানমারে শান্তি ফিরিয়ে আনার বিষয়ে উদ্যোগী হন। ওই দেশের সাধারণ যুব সম্প্রদায়ের কাছে উন্নততর ভবিষ্যৎ ও সুযোগ পৌঁছে দেওয়া দরকার।’’