(বাঁ দিক থেকে) জীবনকৃষ্ণ সাহা, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং মানিক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ ও রেশন দুর্নীতি মামলায় জেলে যেতে হয়েছে তৃণমূলের চার জন বিধায়ককে। এক জন অবশ্য তাঁর এলাকায় ভোটের পরেই জামিন পেয়েছেন। তিনি বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। কিন্তু এখনও জেলে রয়েছেন তিন জন— পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং মানিক ভট্টাচার্য। বিধানসভাওয়াড়ি ফলাফল খতিয়ে দেখলে দেখা যাচ্ছে, চার জনের মধ্যে দু’জনের বিধানসভায় তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে। আর দু’টিতে এগিয়ে তৃণমূল।
জীবনকৃষ্ণের বড়ঞা পড়ে বহরমপুর লোকসভার মধ্যে। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীকে হারিয়ে এ বারই প্রথম সেখানে জয় পেয়েছে তৃণমূল। সৌজন্যে: প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। দেখা যাচ্ছে বড়ঞায় ৫০০ ভোটে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। গোটা লোকসভায় কংগ্রেসের অধীর রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। কিন্তু জীবনকৃষ্ণের বড়ঞায় কংগ্রেস তিনে চলে গিয়েছে। এক নম্বরে উঠে এসেছে বিজেপি।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হাবরার বিধায়ক। হাবরা বারাসত লোকসভার অন্তর্গত। বারাসত লোকসভায় এ বার নিয়ে টানা চার বার জিতলেন তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তবে জ্যোতিপ্রিয় তথা বালুর হাবরায় কাকলি পিছিয়ে রয়েছেন ২০ হাজার ভোটে।
মানিকের কেন্দ্র পলাশিপাড়া। যা কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। কৃষ্ণনগরে এ বারও জিতেছেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, মহুয়াকে জিততে যোগ্য সঙ্গত করেছে জেলবন্দি মানিকের বিধানসভা কেন্দ্র পলাশিপাড়া। সেখান থেকে মহুয়া এগিয়ে রয়েছেন ৩৪ হাজার ভোটে। যা মহুয়ার জয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছে।
তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমেও। দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূলের প্রার্থী মালা রায় লোকসভায় জিতেছেন। সাতটি বিধানসভাতেই তিনি এগিয়ে থেকে লোকসভায় জিতেছেন। পার্থের বেহালা পশ্চিমে মালা এগিয়ে রয়েছেন ১৫ হাজার ভোটে। যদিও ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে পার্থের জয়ের ব্যবধান ৫০ হাজার ভোটের চেয়ে তা অনেকটাই কম।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বলাগড়ের দুই তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুন্তল ঘোষও জেলবন্দি। সেই বলাগড়েও পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। হুগলি লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতলেও বলাগড়ে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়।
জেলবন্দি বিধায়কদের এলাকার ফলাফল নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এটাকে সরলীকরণ করে কিছু বলা যাবে না। স্থানীয় স্তরের সমীকরণ কী ছিল, সেগুলি চিহ্নিত করতে হবে। নিচুতলা থেকে সেই পর্যালোচনা হলে তবেই স্পষ্ট হবে কোথায়, কী কারণে, কী ফলাফল হয়েছে।’’ বহরমপুরে ভোট হয়ে যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই জামিন পান জীবনকৃষ্ণ। ফলে এখন জেলে রয়েছেন তিন জন। তাঁদের মধ্যে দু’জন বালু এবং মানিক ফল ঘোষণার দিন অনেকটা সময় টিভির সামনে কাটিয়েছেন জেলে। জেল সূত্রে খবর, তৃণমূলের জয়ের পরে বালুর শরীরী ভাষায় ‘উচ্ছ্বাস’ দেখা গিয়েছিল। তবে মানিক ছিলেন ভাবলেশহীন। আর প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ টিভির সামনেও যাননি।