গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে এক ধাক্কায় সাতটি আসন বাড়িয়ে নিলেও প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভাওয়াড়ি আসন বিন্যাসে ‘জমি হারাল’ তৃণমূল! অন্য দিকে, ছ’টি লোকসভা আসন হারিয়েও বিধানসভার নিরিখে অগ্রগতি হল বিজেপির।
দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে কোন বিধানসভা থেকে কারা লিড পেয়েছে, নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২৯৪ সদস্যের রাজ্য বিধানসভায় শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির ব্যবধান কমেছে। রাজ্য বিধানসভায় ‘শূন্য’ কংগ্রেস এবং বামেদের ‘খাতা খুলেছে’। অন্য দিকে, ২০২১ সালে নীলবাড়ির লড়াইয়ে একটি আসনে জেতা আইএসএফ লোকসভা ভোটে লিডের নিরিখে শূন্য হয়ে গিয়েছে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২২, বিজেপি ১৮ এবং কংগ্রেস দু’টিতে জিতেছিল। ওই নির্বাচনের প্রেক্ষিতে এ রাজ্যে তৃণমূল এগিয়ে ছিল ১৬৪টি বিধানসভা আসনে। অন্য দিকে বিজেপি এগিয়ে ছিল ১২১টিতে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের ন’টি বিধানসভা আসনে লিড থাকলেও বামেরা নেমে গিয়েছিল শূন্যে।
অথচ, ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২১১টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল। কংগ্রেস ৪৪ এবং তাদের সহযোগী বামেরা ৩২টিতে জিতেছিল। বিজেপি মাত্র তিনটিতে। অবশ্য, পাঁচ বছর পরে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেই চিত্রটা পুরোপুরি বদলে যায়। ২১৩ আসনে জেতে তৃণমূল। বিজেপি ৭৭টিতে জিতে প্রধান বিরোধী দল হয়। আইএসএফ এবং নির্দল প্রার্থীরা একটি করে আসনে জয়ী হয়েছিলেন নীলবাড়ির লড়াইয়ে। সে বার প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে মুর্শিদাবাদ জেলার শামসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরে ভোট স্থগিত ছিল। পরে ওই দু’টি আসনে জিতে ২১৫ হয়েছিল তৃণমূল।
এ বারের লোকসভা ভোটে রাজ্যে ২৯টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ২০১৯-এ ১৮টি লোকসভা আসনের জেতা বিজেপি নেমে এসেছে ১২-য়। অন্য দিকে, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে শূন্য হয়ে যাওয়া কংগ্রেস জিতে নিয়েছে একটি লোকসভা আসন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লোকসভা ভোটের নিরিখে রাজ্যের ১৯২টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। বিজেপি এগিয়ে ৯০টিতে। কংগ্রেস ১১ এবং তাদের সহযোগী সিপিএম একটিতে।
কংগ্রেস-বাম জোটের এগিয়ে থাকা ১২টি আসনই অবশ্য রাজ্যের তিনটি মাত্র জেলা, উত্তর দিনাজপুর মালদা এবং মুর্শিদাবাদে। কংগ্রেস রায়গঞ্জ লোকসভার দু’টি মালদহ উত্তরের চারটি, মালদহ দক্ষিণের তিনটি, জঙ্গিপুর লোকসভার একটি, বহরমপুরের একটি বিধানসভা আসনে এগিয়ে রয়েছে। সিপিএম এগিয়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদ লোকসভা আসনের রানিনগর বিধানসভা আসনে।