সরকারি কর্মচারীদের উৎসব বোনাস বাড়াল রাজ্য সরকার। ফাইল চিত্র।
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র দাবিতে আন্দোলনের আবহেই সরকারি কর্মচারীদের উৎসব বোনাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের শেষে জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুইয়াঁ জানান, নতুন অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের উৎসব বোনাস বাড়তে চলেছে। ২০২২ সালে সরকারি কর্মচারীরা উৎসব বোনাস বাবদ ৪৮০০ টাকা করে পেতেন। চলতি বছরে তাঁরা এই খাতে ৫৩০০ টাকা করে পাবেন। আগে যে সকল কর্মচারী ৩৭ হাজার টাকা বা তার কম বেতন পেতেন, তাঁরাই এই বোনাস পাওয়ার অধিকারী হতেন। বেতনের এই ঊর্ধ্বসীমা এ বার ২ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩৯ হাজার টাকা করা হল।
৩৯ হাজার থেকে ৪৯ হাজার টাকার মধ্যে যাঁরা বেতন পান, তাঁদের উৎসব অগ্রিম বাবদ প্রাপ্য অর্থের পরিমাণও বাড়ানো হল। আগে এই খাতে ১৪ হাজার টাকা পাওয়া যেত। পরিবর্তিত সিদ্ধান্তে ১৬ হাজার টাকা করে পাওয়া যাবে। পেনশনভোগীদের অ্যাড হক ভাতার পরিমাণও বাড়ানো হল। আগে এই বাবদ ২৭০০ টাকা পাওয়া যেত। এ বার থেকে ২৯০০ টাকা পাওয়া যাবে। ৩৩ হাজার টাকা বা তার বেশি বেতন পেতেন, এমন সরকারি কর্মচারীরা এই ভাতা পেতেন। এ বার সেই ঊর্ধ্বসীমা কমিয়ে ৩২ হাজার করা হল।
বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীদের বড় একটা অংশ। আন্দোলনে রাশ টানতে কর্মবিরতি এবং ধর্মঘটে যোগ দেওয়া কর্মচারীদের শো-কজ় করে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। সেই আবহে উৎসব বোনাস বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এক দিকে বিক্ষুব্ধ সরকারি কর্মীদের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া, অপর দিকে ইদের আগে সংখ্যালঘু কর্মীদের মন জয়ের চেষ্টা— দুই লক্ষ্যেই রাজ্য সরকারের এই ঘোষণা বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। যদিও ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতা তাপস চক্রবর্তী আনন্দবাজার অনলাইনকে এই প্রসঙ্গে বলেন, “ডিএ আন্দোলনকে ভেস্তে দেওয়ার উদ্দেশে রাজ্য সরকার এই সব করার চেষ্টা করছে। উৎসব বোনাস খুব অল্প সংখ্যক সরকারি কর্মী পেয়ে থাকেন। এই সামান্য টাকায় কিছুই হবে না।” রাজ্য সরকারের নানা পরিকল্পনা সত্ত্বেও ডিএ আন্দোলন যে থামবে না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।