শনিবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী। — নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার মধ্যেই নতুন স্লোগান শুভেন্দু অধিকারীর মুখে। নন্দীগ্রামে নিজের ভোট দেওয়ার পরে ‘চলো কালীঘাট, ইটগুলো খুলি’ বলে হুঙ্কার দিলেন বিরোধী দলনেতা। শনিবার দুপুরে রাজ্যে ‘জনগণের অভ্যুত্থান’ দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শুভেন্দুর দাবি, রাজ্যে শান্তি ফেরাতে দু’টি পথ রয়েছে। ৩৫৬ বা ৩৫৫ অনুচ্ছেদ জারি করে নির্বাচন অথবা জনগণের অভ্যুত্থান। শুভেন্দু বলেন, ‘‘দুটো রাস্তা রয়েছে। জনগণের অভ্যুত্থান। চলো কালীঘাট। ইটগুলো খুলি। গুলি করুক। প্রথম দশ-বিশ জন মরবে। আমি থাকতে রাজি আছি। তার পরে বাংলার দশ কোটি লোক বেঁচে যাবে। আর দ্বিতীয় ৩৫৬ অথবা ৩৫৫ করে নির্বাচন।’’
নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকার ভোটার শুভেন্দু নন্দনায়ক বাড়ের ৭৭ নম্বর বুথে ভোটে দেন। এর পরেই তিনি শাসকের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দেন। যা নিয়ে পাল্টা তোপ দেগেছে তৃণমূলও। শাসকদলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘হার নিশ্চিত বুঝতে পেরে গিয়েই এই সব বলছে। এই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করার আগে মণিপুর নিয়ে দিল্লির দাদাদের সঙ্গে কথা বলা উচিত শুভেন্দুর।’’
দীর্ঘ দিন ধরেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছেন শুভেন্দু। এখনও পর্যন্ত তাঁর সেই দাবিতে কোনও পদক্ষেপই করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার শুভেন্দুর গলায় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি বার্তাও শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির কে কী ভাববে, অন্য কে কী বলবে আমার জানার দরকার নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে বাংলার পরিত্রাণের জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে এখানে এসেছি।’’
আগেই ‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগান তুলে বিরোধীদের ঐক্য চেয়েছেন শুভেন্দু। শনিবার নতুন করে তেমনই ঐক্যের বার্তা দিলেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি একটা লক্ষ্য নিয়ে এসেছি। তার জন্য আমায় যা করতে হয় করব। পতকা নিয়ে, পতাকা ছেড়ে বাংলার গণতন্ত্র বাঁচাতে যা করতে হয় আমি করব।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় সরকার ভাবছেন কি না জানি না, এই রাজ্যে ৩৫৬ অথবা নির্বাচনের সময়ে ৩৫৫ জারি করে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ না করতে পারলে পশ্চিমবঙ্গে কোনও ভোট হতে পারে না।’’ ভোট শান্তিপূর্ণ করতে কলকাতা হাই কোর্ট যা যা নির্দেশ দিয়েছিল, তা-ও মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। শনিবার নন্দীগ্রাম থেকেই তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহকে ফোন করেন তিনি। ফোনে বলেন, ‘‘আর কত রক্ত চাই আপনার? আমি কমিশনের দফতরে তালা ঝোলাতে কলকাতায় আসছি।’’ প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ কলকাতায় বিজেপি কর্মীরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে আসে। তবে আগে থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ। কমিশন দফতরের কাছাকাছি আসতেই বিজেপি কর্মীদের বাধা দেওয়া হয়। পরে অনেককে আটকও করেছে পুলিশ।