গঙ্গারামপুরে সুকান্তকে দেখেই এগিয়ে আসেন পুলিশকর্মী। — নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য পুলিশের সাহায্য নিয়ে শাসক তৃণমূল সন্ত্রাস চালাচ্ছে বলে সকাল থেকেই অভিযোগ তুলছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্বয়ং এই অভিযোগ তুলছেন। কিন্তু নিজের জেলা দক্ষিণ ২৪ দিনাজপুরে উল্টো চিত্র দেখলেন সুকান্ত। রাজ্য পুলিশের এক কর্মী সুকান্তের কাছে এসেই দায়িত্ব থেকে মুক্তির আর্জি জানালেন। জানালেন, ছাপ্পা ভোটে বাধা দেওয়ার জন্য তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে শাসকদলের নেতারা। মৃত্যুভয়ে তিনি দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চান।
সকাল ১০টা নাগাদ গঙ্গারামপুরের সুখদেবপুরে ১৭৬ নম্বর বুথে ছাপ্পা ভোট পড়ছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সুকান্ত। তখনই রাজ্য পুলিশের কর্মী কৃষ্ণমোহন ঝা সুকান্তের গাড়ির কাছে এসে কাতর স্বরে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার আর্জি জানান। কৃষ্ণমোহন জানান তিনি শিলিগুড়ি কমিশনারেট থেকে এসেছেন। এই অঞ্চলের কাউকেই তিনি চেনেন না। তবে শাসকদলের লোকেরাই তাঁকে মেরে ফেলার জন্য শাসাচ্ছেন বলে অভিযোগ কৃষ্ণমোহনের। সেই সময়ে সুকান্তকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনার হাতে তো লাঠি রয়েছে, ব্যবহার করছেন না কেন।’’
তিনি যে ভয় পাচ্ছেন তা পরে সংবাদমাধ্যমের সামনেও বলেন কৃষ্ণমোহন। তিনি বলেন, ‘‘আমি সরতে চাইছি। আমি কী করব একা? আমায় হুমকি দিচ্ছে। আমি বলেছি, ছাপ্পা ভোট হতে দেব না। তখন বলেছে, ‘চুপচাপ থাকুন। না হয় এখান থেকে সরে যান। পুরোপুরি ছাপ্পা ভোট হবে।’’’ একই সঙ্গে কৃষ্ণমোহন বলেন, ‘‘আমার লাইন সামলানোর কথা। কিন্তু বাধ্য হয়ে বুথের ভিতরে গিয়েছি। তার পরেই মেরে ফেলার হুমকি। আমি এখন এখান থেকে সরে যেতে চাইছি।’’ তাঁর দাবি, এই বিষয়ে তিনি ফোন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও কেউ কিছু জানাননি। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে মেরে ফেলবে বলছে। পুলিশকর্তাদের ফোন করেছি। তাঁরা কিছুই বললেন না।’’
এই প্রসঙ্গে সুকান্ত আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যেই ভোটের নামে প্রহসন চলছে। পুলিশকে নিয়ে ভোট করছে তৃণমূল। আর গঙ্গারামপুরের ঘটনা দেখিয়ে দিল, কোথাও কোথাও সৎ পুলিশকর্মীরা প্রতিবাদ করলে তাঁরাও কতটা অসহায়।’’ তবে সুকান্তের দাবি, বেশির ভাগ জায়গাতেই পুলিশের মদতে গোলমাল করছে তৃণমূল। তিনি বলেন, ‘‘ওই পুলিশকর্মী আমার কাছে আসার আগে তাঁর কর্তাদের কাছেও জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। আসলে উপরের কর্তারা সবটাই করছে তৃণমূলের নির্দেশ মতো।’’