বুধবার সকালে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে হবে শুনানি। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
আরজি কর মামলায় বুধবার রাজ্যের আবেদন শুনবে কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার সকালে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে হবে শুনানি। আরজি করের চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনে শাস্তিপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবারই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার তারই শুনানি।
মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)। সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানানো হয়।
সোমবার শিয়ালদহ আদালত দোষী সঞ্জয়ের আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি ঘোষণা করে। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস নির্দেশনামায় লিখেছেন, আরজি করের ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ হিসাবে বিবেচনা করছেন না তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও জানিয়েছেন, তিনি এটিকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ ঘটনা বলেই মনে করছেন। সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিও তোলেন তিনি। এর আগে এই দাবিতে পথেও নেমেছিলেন তিনি। সোমবার শিয়ালদহ আদালতে সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণার পরে আবার সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ফাঁসির সাজা হলে অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।” এই প্রসঙ্গে গুড়াপ, ফরাক্কা, জয়নগরের মামলার প্রসঙ্গও তোলেন। এই তিনটি ক্ষেত্রেই তদন্ত চালাচ্ছিল রাজ্য পুলিশ। সম্প্রতি তিন ঘটনায় ফাঁসির সাজা দিয়েছে নিম্ন আদালত। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের হাতে এই মামলা থাকলে, আমরা অনেক আগেই ফাঁসির রায় করিয়ে দিতে পারতাম।’’
তবে দোষীকে কেন ফাঁসি না-দিয়ে আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হয়েছে, সে কথা নির্দেশনামায় ব্যাখ্যা করেছেন বিচারক দাস। নির্দেশনামায় তিনি লিখেছেন, ‘যাবজ্জীবন হল নিয়ম। আর মৃত্যুদণ্ড হল ব্যতিক্রম’। তিনি মনে করছেন, ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে ‘চোখের বদলে চোখ’ বা ‘দাঁতের বদলে দাঁত’ বা ‘নখের বদলের নখ’ বা ‘প্রাণের বদলে প্রাণ’-এর মতো প্রতিশোধমূলক প্রবৃত্তিগুলি থেকে সরে আসা উচিত। বর্বরতাকে বর্বরতা দিয়ে বিচার করা উচিত নয় বলে লিখেছেন বিচারক।