রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র ।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস! বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যকে নিশানা করে লিখলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্যপাল আদৌ শান্তিপূর্ণ ভাবে পুরো বিষয়টি নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা কাটাতে আগ্রহী কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন শিক্ষামন্ত্রী।
সোমবার রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যপালের তরফে শীর্ষ আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণি। ব্রাত্যের দাবি, সোমবার অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মামলার শুনানি চলাকালীন দু’পক্ষের সওয়াল শোনার পর বেশ কয়েকটি মৌখিক পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, শীর্ষ আদালতের সেই পর্যবেক্ষণ থেকে স্পষ্ট যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছেন রাজ্যপাল। এ-ও স্পষ্ট, ছ’জনের মধ্যে মাত্র দু’জনকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁদের নিয়োগ করা হয়নি। শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের মন্তব্য ছিল, অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে এবং এত দিনে ৩১টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫-১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। সোমবার শীর্ষ আদালত অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটিয়ে নেওয়ার কথা স্পষ্ট করেছে বলেও দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে এরই পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট শান্তিপূর্ণ ভাবে মিটিয়ে নেওয়ার কথা বললেও আচার্য কি আদৌ বিষয়টির নিষ্পত্তি চান?’’
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে লাগাতার সংঘাত দেখেছে রাজ্যবাসী। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে গড়ালে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্য সরকারের তৈরি তালিকা থেকে অবিলম্বে ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে রাজ্যপালকে। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, রাজ্যের ৩১টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ওই ছ’টি বাদ দিয়ে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকার রাজ্যপালের কাছে বাছাই করা কিছু নামের তালিকা পাঠাবে। এর পরেই অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবনে জরুরি বৈঠক ডাকেন রাজ্যপাল বোস। তবে অভিযোগ উঠেছিল, রাজ্যের ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের লক্ষ্যে আমন্ত্রণ জানিয়েও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে দেখা করেননি রাজ্যপাল। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ব্রাত্যও। এর পর ছ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যাদবপুর এবং গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে দু’জনকে দায়িত্ব দেন রাজ্যপাল। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মামলা সুপ্রিম কোর্টে ওঠার পর মঙ্গলবার তা নিয়ে আচার্য তথা রাজ্যপালের দিকে আঙুল তুলে আবার সরব হলেন ব্রাত্য।