শিয়ালদহ আদালতে প্রিজ়ন ভ্যানে আনা হয়েছে ধৃত সিভিককে। ছবি: সারমিন বেগম।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলেন কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়।
আরজি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুন মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছরের ১১ নভেম্বর। বিচারপর্ব শুরু হয় ঘটনার ৫৯ দিনের মাথায়। ঘটনার ১৬২ দিনের মাথায় রায় এবং সাজা ঘোষণা করল আদালত।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলেন কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়।
এজলাসে চলে গিয়েছেন বিচার অনির্বাণ দাস। আর কিছু ক্ষণ বাদেই আরজি কর মামলার রায় ঘোষণা হবে। শিয়ালদহ আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে দেশ।
শিয়ালদহ আদালতে আরজি কর মামলার রায় ঘোষণা হবে দুপুর আড়াইটে নাগাদ। ইতিমধ্যে আদালতে উপস্থিত হয়েছেন ধর্ষিত এবং মৃত চিকিৎসকের বাবা-মা। আদালতে রয়েছেন সমস্ত পক্ষের আইনজীবীরা।
আরজি কর মামলার রায় ঘোষণা হবে কিছু ক্ষণ পরে। শিয়ালদহ আদালতে বিচারক অনির্বাণ দাস ওই মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
রায় ঘোষণার ঠিক আগে নির্যাতিতার বাবা নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেছিলেন, রাত ২টো পর্যন্ত জেগে মনিটর করেছিলেন। ওঁর কী ইন্টারেস্ট ছিল জানতে চাই। তথ্যপ্রমাণ যে লোপাট হয়েছে, সেটা সিবিআই বলেছে। শুধু সিভিক নয়, সব দোষী সামনে আসবে।’’
শিয়ালদহ আদালতের দিকে রওনা হলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। ধর্ষিত এবং মৃত চিকিৎসকের বাবা বলেন, ‘‘আশা রাখছি দোষীরা সকলে শাস্তি পাবেন। কেউ রেয়াত পাবেন না।’’
আরজি কর মামলায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে আনা হল শিয়ালদহ আদালতে। কনভয়ে প্রিজ়ন ভ্যান ছাড়াও ছিল দু’টি সাদা গাড়ি। প্রেসিডেন্সি জেল থেকে আনা হয়েছে সিভিককে।
আদালতের ব্যারিকেডের মাঝের অংশে পুলিশ ছাড়া বাকিদের থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে আনা হচ্ছে প্রিজ়ন ভ্যানে।
নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অমর্ত্য দে রায় ঘোষণার আগে বললেন, ‘‘নির্যাতিতাকে শুধু শারীরিক ভাবে হত্যা করা হয়নি, তাঁর আত্মাকেও হত্যা করা হয়েছে। যে বা যাঁরা এই কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের প্রত্যেককেই যেন আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।’’
আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারী চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বললেন, ‘‘দোষীর চরমতম শাস্তি চাই। কিন্তু সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কত দূর? সেই তদন্ত থেমে কেন, ধৃত সিভিকের সঙ্গে আর কেউ জড়িত ছিল কি না, তা-ও আজ জানতে চাই।’’
আদালতে পৌঁছে গিয়েছেন বিচারক। সমস্ত পক্ষের আইনজীবীরা চলে এসেছেন। কড়া নিরাপত্তা শিয়ালদহ কোর্টে। ২১০ নম্বর কোর্ট রুমে হবে রায় ঘোষণা।
ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের আইনজীবী কবিতা সরকার শিয়ালদহ আদালতে চলে এসেছেন।
ইতিমধ্যে ভিড় জমতে শুরু করেছে শিয়ালদহ আদালত চত্বরে। অন্যান্য দিনের চেয়ে মানুষের আনাগোনা বেশি। মোতায়েন রয়েছে প্রচুর পুলিশ।
—নিজস্ব চিত্র।
ব্যারিকেড আর ব্যারিকেড। আরজি কর মামলার রায় ঘোষণার আগে নিরাপত্তার কড়াকড়ি শিয়ালদহ আদালত চত্বরে।
—নিজস্ব চিত্র।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হল থেকে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার দিন রাতেও হাসপাতালে ‘ডিউটি’ ছিল তাঁর।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ারকে ওই সেমিনার হল-এ ঢুকতে-বেরোতে। ঘটনার পর দিন অর্থাৎ, ১০ অগস্ট টালা থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন সিভিক। তার পর প্রায় পাঁচ মাস কেটেছে। আরজি করের ঘটনার ১৬২ দিনের মাথায় শনিবার রায় দিল আদালত।
আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত ১১ নভেম্বর। ঘটনার দু’মাসের মাথায় বিচারপর্ব শুরু হয়। শিয়ালদহ আদালতই রায় ঘোষণার দিন জানিয়েছিল। গত ৯ জানুয়ারি সিবিআইয়ের আইনজীবী, নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যেরা এবং তাঁদের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন আদালতে। সেখানে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করে সিবিআই। আদালতে তাঁর ‘সর্বোচ্চ শাস্তি’র আবেদন করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।