Bankura House Collapsed

বাঁকুড়ার ইন্দাসে বাড়ি ধসে বিপত্তি, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত্যু দিদিমা এবং নাতির

অন্য দিনের মতোই বুধবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর নাতিকে সঙ্গে নিয়ে ওই ছিটেবেড়ার ঘরে শুতে যান উজ্জ্বলা। গভীর রাতে যখন দু’জনেই ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন আচমকাই হুড়মুড়িয়ে তাঁদের উপর ভেঙে পড়ে ঘর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৯
Share:

ধসে পড়া সেই বাড়ি। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার ইন্দাসে। —নিজস্ব চিত্র।

বাঁকুড়ায় বাড়ি ধসে মৃত্যু হল দু’জনের। বুধবার গভীর রাতে ইন্দাস নন্দীপাড়ায় আচমকাই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ছিটেবেড়ার ওই বাড়ি। চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান উজ্জ্বলা হাজরা (৫৫) নামের এক প্রৌঢ়া এবং তাঁর নাতি দেব কেওড়া (১৫)। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি নজরে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যান ইন্দাস ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং অন্য প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁচাবাড়িতে বসবাস করা উজ্জ্বলা সম্প্রতি ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে বরাদ্দ অর্থ হাতে পান। প্রকল্পের টাকা হাতে আসতেই নিজের কাঁচা বাড়ি ভেঙে পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন তিনি। ভিত খননের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। নতুন বাড়ি তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত উঠোনের এক পাশে থাকা ছিটেবেড়ার ঘরেই আশ্রয় নিয়েছিলেন উজ্জ্বলা। সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে আসে নাতি দেব কেওড়া। অন্য দিনের মতোই বুধবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর নাতি দেবকে সঙ্গে নিয়ে ওই ছিটেবেড়ার ঘরে শুতে যান উজ্জ্বলা। গভীর রাতে যখন দু’জনেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন আচমকাই হুড়মুড়িয়ে তাঁদের উপর ভেঙে পড়ে ঘরটি। ঘরের ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়ে যান দু’জন।

বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়দের নজরে আসে বিষয়টি। তড়িঘড়ি ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে তার নীচ থেকে দু'জনের দেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়েরা। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ইন্দাস থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

Advertisement

উজ্জ্বলার আত্মীয় কার্তিক হাজরা বলেন, "কাকিমা বাংলার বাড়ি পাওয়ায় পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরি করছিলেন। ভিত খনন করা হয়েছিল। স্থানীয় একটি পুকুরের জল সেচ করে বের করা হচ্ছিল। সেই পুকুরের জল এসে কাকিমার ঘরের ভিতে জমা হয়ে যায়। সেই জলেই ভিজে গিয়ে ছিটেবেড়ার দেওয়াল ভেঙে কাকিমা এবং তাঁর নাতির মৃত্যু হয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত বাগদী বলেন, “গভীর রাতে বাড়িটি ধসে পড়ে। বাড়ির মধ্যে নিজের নাতিকে নিয়ে শুয়েছিলেন উজ্জ্বলা হাজরা। রাতে পাড়ার লোকজন কিছু জানতে পারেনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে বিষয়টি নজরে আসে।”

এই ঘটনা প্রসঙ্গে ইন্দাসের বিডিও সুরেন্দ্রনাথ পতি বলেন, “এই সময় মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ার কথা নয়। কিন্তু স্থানীয় একটি পুকুরের জল বার করার সময় সেই জল ঢুকে পড়ে ওই বাড়িতে। তার ফলেই বাড়ির দেওয়াল নরম হয়ে ধসে পড়েছে।” বিডিও জানান, উজ্জ্বলা ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছিলেন। সেই টাকায় বাড়ি নির্মাণের কাজও শুরু করেছিলেন। স্থানীয়েরা নতুন বাড়ি তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত তাঁকে স্থানীয় স্কুলে থাকার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি তা করেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement