DYFI

খাতা-কলমে সদস্য সংগ্রহে নজির সিপিএমের যুবদের, ভোটে তবে কী হয়? প্রশ্ন উঠেছে সংগঠনের অন্দরেই

২০২৪ সালের সদস্য সংগ্রহ শেষ হয়েছিল ডিসেম্বরে। তার পরে জেলাগুলির তরফে সংগৃহীত সদস্যের সংখ্যা জমা পড়েছে রাজ্য কমিটিতে। যার যোগফল দাঁড়িয়েছে ৩৪ লক্ষের কিছু বেশি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:১৬
Share:

ডিওয়াইএফআই নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান হয়েছিল ২০১১ সালে। তার পর থেকে দলগত ভাবে সিপিএম যেমন ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে, তেমন তাদের গণসংগঠনগুলিও দুর্বল হয়েছে। চলমান এই পরিস্থিতির মধ্যেই সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই সদস্য সংগ্রহে ‘নজির’ গড়ল। ২০২৪ সালের সদস্য সংগ্রহ শেষ হয়েছিল ডিসেম্বরে। তার পরে জেলাগুলির তরফে সংগৃহীত সদস্যের সংখ্যা জমা পড়েছে রাজ্য কমিটিতে। যার যোগফল দাঁড়িয়েছে ৩৪ লক্ষের কিছু বেশি। সংগঠন সূত্রে বলা হচ্ছে, গত সাত বছরের মধ্যে এই সংখ্যা রেকর্ড!

Advertisement

যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও সেই পরিসংখ্যান ঘোষণা করেনি মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়দের সংগঠন। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহার বক্তব্য, ‘‘আমরা এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলছি না। তবে খুব তাড়াতাড়িই এ ব্যাপারে আমরা আমাদের বক্তব্য জানাব।’’ আগামী ২০ জানুয়ারি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণসভা করবে ডিওয়াইএফআই। সম্ভবত ওই দিনই সদস্যসংখ্যার পরিসংখ্যান ঘোষণা করে ‘শক্তি’ জানান দিতে চাইবে তারা।

যদিও এই খাতা-কলমের সংখ্যা নিয়ে সংগঠনের অভ্যন্তরে নানা মত রয়েছে। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দক্ষিণবঙ্গের এক নেতার কথায়, ‘‘এ ভাবে সদস্য সংগ্রহ করে চাঁদা বাবদে সংগঠনের তহবিলে হয়তো অর্থ আসে। কিন্তু এর রাজনৈতিক উপযোগিতা কী? সামগ্রিক ভাবে ভোটে প্রতিফলন হচ্ছে কি না, তাতে নজর দেওয়া জরুরি।’’

Advertisement

ডিওয়াইএফআইয়ের সাধারণ সদস্য হতে ২ টাকা করে নেওয়া হয়। শিক্ষা-কাজ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কিছু দাবির ভিত্তিতে এই সদস্য সংগ্রহ হয়। সাধারণ নিয়ম হল, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সিদের সদস্য করেন ইউনিট স্তরের নেতৃত্ব। তাতে সঙ্গ দেন আঞ্চলিক ও জেলার নেতারাও। ইদানীং রাজ্য নেতৃত্বও পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছনোর চেষ্টা করেছেন। এতদ্‌সত্ত্বেও সংগঠনের মধ্যেই সদস্য সংগ্রহের ‘প্রক্রিয়া’ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। খাতা-কলমে যে সদস্য সংগ্রহ হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের কাছে সংগঠকেরা পৌঁছেছেন কি না, তা যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করছেন নেতৃত্বের অনেকে। এক যুবনেত্রীর বক্তব্য, ‘‘ধরা যাক আমরা একটা বুথ এলাকায় যুব বয়সের ১০০ জনকে সদস্য করছি। কিন্তু ভোটের সময়ে সেই বুথেই এজেন্ট দিতে পারছি না! পরিসংখ্যান আর বাস্তবের ফারাক এটাই।’’ তবে তাঁর এ-ও বক্তব্য যে, ‘‘সংগঠনে অনেক সমস্যা আছে ঠিক কথা। কিন্তু এ-ও বাস্তব যে, গত দু’তিন বছরে ডিওয়াইএফআই নিজস্ব শক্তিতে বেশ কিছু বড় কর্মসূচি করতে পেরেছে। ভোটে তার প্রভাব না পড়লেও সাংগঠনিক নড়াচড়ায় ইতিবাচক প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।’’

কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত ‘ইনসাফ যাত্রা’ শেষে গত বছর জানুয়ারিতে মিনাক্ষীরা ব্রিগেডে সমাবেশ করেছিলেন। সেই সভায় ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু সেই ব্রিগেডেও প্রশ্ন ছিল, এই ভিড় বুথে পৌঁছবে তো? লোকসভা ভোটে দেখা গিয়েছে, কর্মসূচিতে ভিড় হলেও ভোটবাক্স ফাঁকাই থেকে গিয়েছে। নতুন বছরের জানুয়ারিতে সদস্য সংগ্রহে নজির গড়ার পরে সেই পুরনো প্রশ্নই নতুন করে উঠছে সংগঠনের অন্দরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement