—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বেহালায় বড়িশা হাই স্কুলের সামনে পথ দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যুর পরে পুলিশকে একাধিক পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছিল আগেই। সোমবার সকালেও পুলিশি তৎপরতার সেই ছবি দেখা গেল। সকালে স্কুল শুরুর সময় ওই এলাকার একাধিক মোড়ের মাথায় ট্র্যাফিক পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের তরফে আগেই স্কুলের সামনে বুম ব্যারিয়ার লাগানো হয়েছিল। সোমবার থেকে সেখানে এক জন পুলিশকর্মীকেও মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার বড়িশা হাই স্কুলের স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে ট্র্যাফিক সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে। হ্যান্ডবিলের মাধ্যমে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচিরও প্রচার চালানো হবে।
সোমবার সকালে ডায়মন্ড হারবার রোডে ঢুকে পড়া একটি মালবাহী গাড়িকে আটক করে পুলিশ। গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করে চালককে নিয়ে যাওয়া হয় ঠাকুরপুকুর থানায়। পুলিশের তরফে এই তৎপরতার ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও, দুর্ঘটনার পর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কমছে না। পুলিশের এই তৎপরতা কত দিন থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। পুলিশ আগে কেন সতর্ক হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তাঁদের।
সোমবার সকালে সাউথ-ওয়েস্ট, সাউথ ডিভিশনের বিভিন্ন থানার তরফে কনস্টেবল, সিভিক ভলান্টিয়ারদের ডায়মন্ড হারবার রোডের ট্র্যাফিক গার্ডে রিপোর্ট করতে বলা হয়। শুক্রবার পুড়ে যাওয়া ডায়মন্ড হারবার রোড ট্রাফিক গার্ডকেও ধীরে ধীরে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সেখানকার সিসি ক্যামেরা ভেঙে গিয়েছিল। নতুন সিসি ক্যামেরা এখনও আসেনি দফতরে। পুলিস সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই একটি কম্পিউটার ট্র্যাফিক গার্ডে এসেছে। ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের জন্য ওয়্যারলেস সেটটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। নতুন ওয়্যারলেস সেটও লালবাজার থেকে এই ট্র্যাফিক গার্ডে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
শুক্রবার সকালে বেহালা চৌরাস্তার কাছে লরি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বড়িশা হাই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৌরনীল সরকারের। লরির ধাক্কায় আহত সৌরনীলের বাবা বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেই ঘটনার জেরে শুক্রবার সকাল থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার রোডের বেহালা চৌরাস্তা এলাকা। দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ এবং উন্মত্ত জনতা। কিন্তু এক দিন পরেই সেই চৌরাস্তাতেই পুলিশি তৎপরতা চূড়ান্ত। শনিবার সকালে পথ নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে আসেন সিপি। শুক্রবারের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাত থেকেই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি নিজে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতার মধ্যে তুলনা করে দেখে নিন। সব থেকে ভাল পথ নিরাপত্তা রয়েছে কলকাতাতেই। সব সময় গাড়ির ভুল থাকে না। পথচারীদেরও ভুল থাকে। তাই পথচারীদের মধ্যেও সচেতনতা বাড়াতে হবে।’’