শিলিগুড়িতে পৃথক কর্মসূচিতে (বাঁ দিকে)মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: ফেসবুক।
উত্তরবঙ্গ সফরের শেষ দিনে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বক্তৃতা শেষ করলেন ঠিক সেই সময়েই শিলিগুড়ি শহরের কাশ্মীর কলোনির অপর ভিআইপি রেস্ট হাউজের প্রেক্ষাগৃহে বক্তৃতা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নিজের বক্তৃতার শেষ ভাগে শুভেন্দু জানালেন, এ বার থেকে প্রতি মাসে দু’বার করে উত্তরবঙ্গ সফরে আসবেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর আসন থেকে সরাতেই যে প্রতি মাসে তাঁকে উত্তরবঙ্গে আসতে হবে, তা-ও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। সভামঞ্চ থেকেই তাই ১৬ ডিসেম্বরের কর্মসূচি ঘোষণা করে দেন তিনি।
শুভেন্দু বলেন, ‘‘১৬ তারিখ আবার আসব। চা শ্রমিকদের সমাবেশ। চা বাগানের মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশের কথা ওই দিন বলব। শ্রমিকদের ভাঙা ঘর মালিকদের ঠিক করার কথা। মালিকরা মেরামত করবে না। তারা টাকা জমা দিয়ে দেবে ভাইপোর অ্যাকাউন্টে। ওই ভাঙা ঘরগুলোর পাল্টে দেওয়ার নাম করে ৬০ হাজার চা বাগান শ্রমিকের তিন লক্ষের বেশি ভোট, মিথ্যে কথা বলে নেওয়া হয়েছে। উনি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে গিয়েছেন। ওই দিন উত্তর দেব। ওই দিন ভগবান বিরসা মুন্ডাকে কুমারগ্রামে সম্মান জানাব।’’ এর পরেই তিনি আরও বলেন, ‘‘চা বাগানের শ্রমিকদের সমাবেশ নাগরাকাটায়। আর কুমারগ্রামে আদিবাসী মূলবাসীদের নিয়ে সম্মেলন হবে। এ বার থেকে মাসে দু’বার করে আসব। প্রয়োজনে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করব। শিলিগুড়িতে থাকার ব্যবস্থাও করে নিয়েছি।’’
মমতার জমানায় উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। পরিসংখ্যান দিয়ে বিরোধী দলনেতার দাবি, ‘‘২০২০-২১ অর্থবর্ষে বাজেটে ঘোষণা হয়েছিল ৭১০ টাকা। দেওয়া হয়েছে ২৪৬.০৮ টাকা। ২০২১-২২ সালের বরাদ্দ ঘোষণা হল ৭৫৯ কোটি টাকা, দেওয়া হল ১৭০.২৯ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ সালে বরাদ্দ হল ৮০০ কোটি, দেওয়া ৩০৮ কোটি টাকা। দিনে দিনে উত্তরবঙ্গের জন্য বরাদ্দ কমানো হয়েছে।’’ বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, ‘‘উত্তরবঙ্গকে মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের দিক থেকে বঞ্চিত করেছেন। নির্বাচন এলে এখানে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেন, বেড়াতে যাওয়ার জায়গা মনে করেন। ৩০ কোটি টাকা দিয়ে ব্যাডমিন্টন কোর্ট দিয়ে বড় বাড়ি বানিয়েছেন। টাইগার হিল, গজলডোবা, চালসা, রাজাভাতখাওয়া মালদহের সেচ গেস্ট হাউস তৈরি করা হয়েছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে। ফার্দিনান্দ মার্কোস ও সাদ্দাম হোসেনের মতো প্রাসাদ বানিয়েছেন নিজের জন্য।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ১৩ হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন উত্তরবঙ্গকে। কিন্তু কোথায় সেই টাকা? নদীভাঙনের জন্য কেন সেই টাকা খরচ করেননি।’’