মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফেসবুক।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মঙ্গলবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে পা রেখেই রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছিলেন। দুপুরে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম থেকে পাল্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমরা রাজনীতি কম করি, উন্নতি বেশি করি। কেউ কেউ আছে, সারা দিন কুৎসা করে, গালাগাল দেয়। মনে রাখবেন, খারাপ কথা বললে মন খারাপ হয়, ইতিবাচক মনোভাবের ক্ষতি হয়।’’
মঙ্গলবার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের কর্মসূচি থেকে সরাসরি বিজেপির নাম করে নিশানা করেন মমতা। পাশাপাশি, বাংলার বঞ্চনা নিয়ে আরও এক বার সরব হন তিনি। মমতার কথায়, ‘‘শুনে রাখো বিজেপি সরকার, আমরা শুধু ভোটের সময় পাঁচ কেজি চাল, আটা দিই না। সারা বছর দিই। আবার ভোট এসেছে, অমনি ঘণ্টা বাজাতে শুরু করে দিয়েছে। এই দেব, সেই দেব বলছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আজকে আর উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত নয়। আজকে উত্তরবঙ্গ উন্নত। উন্নত শির হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রী আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিল্লি যাবেন। ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে সর্বভারতীয় স্তরের বিজেপি জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক। পরের দিন অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক রয়েছে মমতার। মুখ্যমন্ত্রী আগেই সময় চেয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে জানা যায়, ২০ তারিখ সময় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মমতা শিলিগুড়ির প্রশাসনিক সভা থেকে বলেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়েছিলাম। উনি সময় দিয়েছেন। আমরা বাংলার হকের পাওনার কথা বলতে যাব। স্পষ্ট বলব, আমাদের টাকা আমাদের দাও।’’
গত এক-দেড় বছর ধরেই তৃণমূল তথা রাজ্য সরকার বাংলার বকেয়া নিয়ে সরব। তাঁদের বক্তব্য, স্রেফ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মনোভাব থেকেই কেন্দ্র বাংলার পাওনা টাকা দিচ্ছে না। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। এ নিয়ে গত অক্টোবরে তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লি অভিযান করেছিল বাংলার শাসকদল। তার পরেও টাকা আসেনি। সংসদে শীতকালীন অধিবেশনের সময়ে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ স্পষ্ট জানান, তাঁর হাতে টাকা দেওয়ার এক্তিয়ার নেই। কিছু যদি করতে পারেন, তা একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই পারবেন। যদিও তার অনেক আগেই মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। পাশাপাশি, পাওনা না পেলে রাজধানীর রাস্তায় আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী।