রাজনীতির ময়দানে সিংহ অর্জুনের তর্জন-গর্জন এখনও শোনা গেলেও নিজের তালুকে আর রাজনৈতিক জোর রইল না তাঁর।
রাজ্যে বিজেপি যতই নিস্তেজ হয়ে যাক, এখনও ‘দাপুটে সাংসদ’ হিসেবে পরিচিত অর্জুন সিংহ। রাজনীতির ময়দানে সিংহ অর্জুনের তর্জন-গর্জন এখনও শোনা যায়। কিন্তু নিজের তালুকে আর রাজনৈতিক জোর রইল না তাঁর।
বিধানসভা নির্বাচনে ভাটপাড়া থেকে কম ব্যবধানে হলেও ছেলে পবন সিংহকে জিতিয়ে আনতে পেরেছিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। কিন্তু পুরভোটে কর্তৃত্ব রাখতে পারলেন না ভাটপাড়ায়। তাঁর বর্তমান দল বিজেপি একটি আসনও পেল না। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট হয়নি। ৩৫টি ওয়ার্ডের পুরসভায় বাকি ৩৪টিতেই জয় পেয়েছে তৃণমূল।
অর্জুনের লোকসভা এলাকায় ভাটপাড়া ছাড়াও রয়েছে ব্যারাকপুর, হালিশহর, কাঁচরাপাড়া, নৈহাটি, গারুলিয়া এবং টিটাগড় পুরসভা— সর্বত্রই উড়ল সবুজ আবির। কোনও পুরসভার কোনও ওয়ার্ডেই গেরুয়া আবিরের নামগন্ধ নেই।
অর্জুনের নিজের পাড়ায় প্রার্থীই ছিল না বিজেপি-র। পদবি ‘সিংহ’ হলেও অর্জুনের বাড়ির নাম ‘মজদুর ভবন’। ভাটপাড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থীই ছিল না পদ্মের। সেটাও ছিল সিংহ পরিবারে বড় ধাক্কা। কারণ, অর্জুনের দাবি মেনেই তাঁর ভাইপো সৌরভ সিংহকে বিজেপি প্রার্থী করেছিল ওই ওয়ার্ডে। কিন্তু মনোনয়ন দেওয়ার পর তৃণমূলে চলে যান সৌরভ। ওয়াকওভার পেয়ে যায় ঘাসফুল। ভাইপো সম্পর্কে অর্জুন বলেছিলেন, ‘‘ব্যাটা রাবণ নয়, রামের ঘরের বিভীষণ!’’
এরই মধ্যে কাঁচরাপাড়ায় মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনে বাবা ভোট লড়তে কৃষ্ণনগর উত্তরে চলে যাওয়ায় বীজপুর জয়ের জন্য নাকি অর্জুনের উপরে নির্ভর করেছিলেন শুভ্রাংশু। পরাজয়ের পরে বীজপুর হারিয়ে দেওয়ার জন্য বিজেপি-র অন্দরেই আঙুল উঠেছিল অর্জুনের দিকে। সেই শুভ্রাংশু তার পরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছিলেন। এ বার তিনি কাউন্সিলরও হয়ে গেলেন। অনেকের দাবি, সেই ঘটনাও অর্জুনের কাছে ‘স্বস্তিদায়ক’ নয়।