কাজলকে কম কথা বলার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত বিকাশকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েছে তৃণমূল। — ফাইল চিত্র।
অনেকে মনে করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত কাজল শেখের গুরুত্ব বীরভূম জেল তৃণমূলে বাড়বে। কিন্তু হল উল্টোটাই। তৃণমূল সূত্রে খবর, কাজলকে শুক্রবার ধমক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশি কথা বললে, দল তাঁকে শো কজ় করতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে কাজলের সঙ্গে কথা বলার জন্য আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।
কালীঘাটে নিজের বাড়িতে বীরভূম জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে শুক্রবার বৈঠকে বসেন মমতা। তবে সেই বৈঠকে না কি অনুব্রতর নামই ওঠেনি। বৈঠক শেষে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কেষ্টকে ওই জেলার সভাপতি পদ থেকে সরানো হবে কি না সে প্রসঙ্গে কোনও আলোচনাই হয়নি। অনুব্রত গ্রেফতারের পরেই মমতা জানিয়েছিলেন, তিনিই দেখবেন বীরভূমের সংগঠন। শুক্রবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, মমতা ছাড়াও ওই জেলায় সাংগঠনিক বিষয় দেখবেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।
বৈঠকের মধ্যেই কাজলকে মমতা ধমক দেন বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি। অনুব্রত আসানসোল জেলে থাকার সময়েই কাজলের একটি মন্তব্য দলকে অস্বস্তিতে ফেলে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘গতকাল বিকাশ রায়চৌধুরী বলেছেন, উনি কেষ্ট’দার পরামর্শ মতো চলছেন। হয়তো বিকাশ’দার সঙ্গে কেষ্ট’দার জেল থেকে ফোনে কথাবার্তা হচ্ছে। সেই জন্য বিকাশ’দা বলতে পারছেন— এটা জেলা সভাধিপতির কথা। তাঁর ফোন চেক করলে বোঝা যাবে।’’ তৃণমূলের বীরভূম জেলার কোর কমিটিতেও আছেন বিকাশও। কাজলের মন্তব্যের পরে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কেষ্ট যে ভাবে দল চালাত, আমরাও সেই ভাবেই চালাচ্ছি। উনি কেন বিতর্ক তৈরি করছেন জানি না। দলে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। তিনি জেলে আছেন তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। এই দাবিটা মিথ্যে।’’
সম্প্রতি জেলায় ‘কাজল ঝড়’ উঠবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বীরভূমের এই নেতা। এই ধরনের মন্তব্য যে তিনি পছন্দ করছেন না তা শুক্রবার স্পষ্ট করে দেন মমতা। বৈঠকে উপস্থিত এক তৃণমূল নেতার কথা অনুযায়ী, মমতা বলেন, ‘‘কাজল তুই সবেতে বেশি কথা বলছিস। এর পর বললে কিন্তু আমি শো কজ় করব।’’ মমতার ধমকের সময়ে কাজল চুপ করে ছিলেন বলেই জানিয়েছেন ওই নেতা।
কাজলকে কম কথা বলার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত বিকাশকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েছে তৃণমূল। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এখন থেকে বীরভূম জেলা তৃণমূল নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বিকাশই শুধু কথা বলবেন।