রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ ইস্যুতে টুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। —ফাইল চিত্র।
রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ কি বিজেপি-বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলল? শুক্রবার রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের সমালোচনায় যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সীতারাম ইয়েচুরি একই সুরে গলা মিলিয়েছেন, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তৃণমূলের সর্বময় নেত্রীর মতো সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহারের অভিযোগ করলেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করা— তৃণমূল যে অভিযোগ অহরহ করে, একই অভিযোগ করলেন ইয়েচুরিও।
‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে ২ বছর জেলের সাজাপ্রাপ্ত রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তার পরেই সরব হয়েছেন বিরোধী দলগুলির নেতৃত্ব। এ নিয়ে মমতা টুইট করেন দুপুর ৩টে নাগাদ। তার ঠিক ৩৮ মিনিট পর একটি টুইট করেন ইয়েচুরি। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক টুইটে লেখেন, ‘‘বিজেপি এখন বিরোধী শিবিরের নেতাদের টার্গেট করতে অপরাধমূলক মানহানির পথ বেছে নিয়েছে। এবং রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ তেমনই একটি পথ।’’ ইয়েচুরি আরও লেখেন, ‘‘এটি বিরোধীদের বিরুদ্ধে ইডি অথবা সিবিআই-এর চরম অপব্যবহারেরও উপরে আসে। এই ধরনের স্বৈরাচারী হামলাকে প্রতিহত এবং পরাজিত করুন।’’
বস্তুত, বাংলায় যখন বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় সিবিআই, ইডির অভিযান এবং তদন্তের মূলে বিজেপির ‘ষড়যন্ত্রের রাজনীতি’ দেখছে তৃণমূল, সেখানে বাংলার সিপিএম নেতৃত্ব শাসকদলকে তুলোধনা করছেন। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে ইয়েচুরির এই টুইটবার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
কিছু দিন আগে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার গ্রেফতারির প্রতিবাদে দেশের ৯ বিরোধী নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন। চিঠির মূল বক্তব্য, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ‘অপব্যবহার’। ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরকে ব্যবহার করে বিরোধীদের অপদস্থের অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা থেকে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সেই চিঠিতে সই ছিল ভারত রাষ্ট্র সমিতি প্রধান চন্দ্রশেখর রাও, জম্মু এবং কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রধান শরদ পাওয়ার, শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরের। তবে সিপিএম বা কংগ্রেসের কোনও নেতার সই ছিল না। তবে রাহুল-ইস্যুতে মিলে গেল মমতা-ইয়েচুরির সুর।
কিন্তু বাংলার সিপিএম নেতৃত্ব? শুক্রবার বিকেলে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সাংবাদিক বৈঠক করলেন। সেখানে উঠে এল, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি নিয়ে তৃণমূল সরকারের অভিযোগের বিষয়ও। রাহুল প্রসঙ্গেও বললেন তিনি। বিমানের কথায়, ‘‘রাহুল তো আর ক্রিমিনাল নন। যা হয়েছে, তাতে সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণ প্রকাশ পেয়েছে। গোটা দেশের এই বিষয়ে গর্জে ওঠা উচিত।”