West Bengal Panchayat Election 2023

পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’, তৃণমূলের কর্মযজ্ঞে আর কী জানালেন অভিষেক

দিদির দূত হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাড়ে তিন লক্ষ প্রতিনিধি ২ কোটি বাড়িতে পৌঁছবে। আর কী কী থাকতে চলেছে নতুন ‘সুরক্ষা কবচ’-এ সবিস্তারে বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫২
Share:

সাংবাদিক বৈঠকে নজরুল মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে ডাকা দলীয় সভায় আগামী দু’মাসের বিশেষ কর্মসূচির ঘোষণা করল তৃণমূল। যে কর্মসূচির লক্ষ্য জনসংযোগ নয় বরং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় মা মাটি মানুষের জীবনের সঙ্গী হওয়া। সোমবার নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের ডাকা সভার মঞ্চ থেকে ওই কর্মসূচিকে তৃণমূলের ‘কর্মযজ্ঞ’ বলে ঘোষণা করে অভিষেক জানালেন, এটি বাংলার ১০ কোটি মানুষের জন্য ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’। যার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে ‘দিদির দূত’।

Advertisement

অভিষেক জানিয়েছেন, এই ‘দূত’ বা প্রতিনিধিদের মধ্যে যেমন বাংলায় তৃণমূলের সাড়ে তিন লক্ষ স্বেচ্ছাসেবী থাকবেন তেমনই থাকবে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও। যার কাজ হবে বাংলার ১০ কোটি মানুষ এবং ২ কোটি বাড়ির সমস্যা, অভাব, অভিযোগের কথা দলের শীর্ষ স্তরে, এমনকি নেত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়া। আর তাই এই কর্মযজ্ঞের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’।

কী কী থাকছে ‘দিদির সুরক্ষা কবচে’? অভিষেক জানিয়েছেন,

Advertisement
  • ১১ জানুয়ারি থেকে এই কর্মসূচি কার্যকর হবে।
  • তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরের ৩ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবীকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।
  • বাংলার ১০ কোটি মানুষ এবং ২ কোটি পরিবারের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছবেন তাঁরা।
  • ‘দিদির দূত’ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসের ওই সাড়ে তিন লক্ষ প্রতিনিধি কাজ করবে।
  • বাংলার জনতা যাতে সরকারের ১৫টি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা ঠিক মতো পেতে পারেন, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।
  • দিদির দূত অ্যাপের মাধ্যমে প্রত্যেকটি বাড়ি ম্যাপিং করে আলাদা আলাদা প্যারামিটারের সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন— শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, স্টুডেন্ট্স ক্রেডিট কার্ড, মানবিক পেনশন, স্বাস্থ্যসাথী, বাংলা আবাস যোজনা, খাদ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, যুবশ্রী মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।
  • আগামী ২ মাস ধরে রাজ্য তৃণমূল স্তরের ৩৫০ নেতা দশ দিন করে প্রতিটি অঞ্চলে রাত্রিযাপন করবেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা যাতে নেত্রীর কাছে পৌঁছয়, তার ব্যবস্থা করবেন।
  • নেতারা চলে আসার পরের দিন থেকে দিদির দূতেরা গিয়ে প্রতি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দেখবেন, জনগণ সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কি না।
  • প্রতিটি অঞ্চলের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাধিপতি-সহ এলাকার রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক প্রধানদের নিয়ে ৩২০ জনের দল তৈরি হয়েছে।
  • দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে ৩৩৪৩টি অঞ্চল। ২ মাসের কর্মসূচিতে এই সমস্ত অঞ্চলের ৯৮ শতাংশেই গিয়ে পৌঁছতে পারবেন দিদির দূতেরা।
  • প্রতিটি অঞ্চলে গিয়ে দিদির দূতেরা কী কী করবেন, তার তালিকা ধরানো হবে। সেই অনুযায়ীই কাজ করতে হবে তাঁদের।
  • তবে নির্ধারিত কর্মসূচির পাশাপাশি সারপ্রাইজ় ভিজ়িটও করতে হবে। যাতে এলাকার প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যায়।
  • রাজনৈতির স্তরের নেতারা যখন দশ দিনের সফরে যাবেন, তখন সফর শুরু করতে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে।
  • প্রতিটি এলাকার মাহাত্ম্যপূর্ণ স্থান দর্শন করতে হবে।
  • সমাজের প্রভাবীদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে হবে, যাতে তাঁরা এলাকার ভালমন্দ সম্পর্কে নিজেদের মতামত জানাতে পারেন।
  • এলাকার মানুষের সঙ্গে মধ্যাহ্ণভোজ সেরে এর পর জনসংযোগ করতে হবে নির্দিষ্ট বুথে।
  • এলাকার মানুষজনকে দিদির সুরক্ষাকবচের ১৫টি প্রকল্পের কথা জানানো, দশ দিনের সফর শেষে দিদির দূতেরা কী কী করবেন, সে ব্যাপারেও অবগত করা।
  • সন্ধ্যায় দলের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করবেন রাজ্য স্তরের নেতারা। দিদির দূত হিসাবে যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের কী কী করতে হবে তা বুঝিয়ে দেবেন তাঁরা।
  • দিদির দূতদের প্রত্যেককে একটি করে কিট ব্যাগ দেওয়া হবে প্রত্যেক জেলা হেড কোয়ার্টার থেকে।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

  • ওই কিটব্যাগে থাকবে নির্দেশিকা। এ ছাড়া দিদির অর্থাৎ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা চিঠি। কিউ আর কোড থাকবে। স্ক্যান করলেই দিদির দূত ডাউনলোড হবে। থাকবে ক্যালেন্ডার। ২০২৩ এবং ২০২৪ দু’বছরের ক্যালেন্ডার বাড়িতে বাড়িতে দিতে হবে। থাকবে ব্যান্ড এবং দিদির দূত লেখা ব্যাজ। যে ব্যান্ড নিজে পরবেন এবং যাঁদের বাড়িতে যাচ্ছেন, তাঁদেরও পরাতে পারেন।
  • তৃণমূলের স্বেচ্ছাসেবীরা যাতে দিদির যোগ্য দূত হিসাবে আচরণ করবেন। বিনম্র আচরণ করেন, সে ব্যাপারে দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ।
  • ৩০ মিনিট করে প্রত্যেক বাড়িতে কাটাতে হবে দিদির দূতেদের। ধৈর্যচ্যুতি চলবে না।
  • প্রত্যেক বুথ থেকে ৫টি করে টিম তৈরি করতে হবে। প্রতিটি টিমে থাকবেন ৪ থেকে ৫ জন। তাঁদের কাজ হবে, মাসে দশ দিন অন্তত ৫টি করে বাড়িতে যাওয়া। বাড়ি ম্যাপ করা থাকবে।
  • কাজের বাইরে অন্তত ২ ঘণ্টা করে দলকে সময় দিতে হবে।
  • তবে সব কাজ শুরুর আগে ৩ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত সবাইকে অবগত করতে হবে জেলার রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক প্রধানদের।
  • প্রথমে জেলা সদরে সাংবাদিক বৈঠক। পরে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে সাংবাদিক বৈঠক করতে হবে। এর পাশাপাশিই চলবে দিদির দূতেদের প্রশিক্ষণ শিবির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement