এগরা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাশে বসেছিলেন তৃণমূলের সমরেশ দাস।
তাঁর ‘অপরাধ’ ছিল যে তিনি এগরা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাশে বসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেছিলেন। যার জেরে দলে শো-কজের মুখে পড়েছেন এগরার তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাস। ওই মঞ্চেই বিধায়কের সঙ্গে থাকা এগরা-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতিকে পদ থেকে অপরসারণ করা হয়েছে। ভর্ৎসিত হয়েছেন এগরার পুরপ্রধান ও এক কাউন্সিলর।
গত ৩ জানুয়ারি ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে তৃণমূল জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী জানিয়েছিলেন দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে সমরেশ দাসকে শো–কজ করা হয়েছে। সাতদিনের মধ্যে তাঁকে জবাব দেওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। যদিও এক সপ্তাহ পরে বৃহস্পতিবারও তৃণমূল জেলা সভাপতির পাঠানো সেই শো-কজের চিঠি হাতে পাননি বলে সমরেশ দাবি করেছিলেন। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর দাবি, ‘‘সমরেশকে শো-কজের চিঠি ৫ জানুয়ারি পাঠানো হয়েছে ডাকযোগে। ৬ জানুয়ারি প্রথমে উনি চিঠি নিতে অস্বীকার করেছিলেন। পরে ৭ জানুয়ারি উনি সেই চিঠি গ্রহণ করেছেন। আমার কাছে তার প্রমাণ রয়েছে।’’
জেলা সভাপতির এমন বক্তব্যের পরে শুক্রবার সমবেশ বলেন, ‘‘এ দিনই দুপুরে শো-কজের চিঠি হাতে পেয়েছি। দু’একদিনের মধ্যে শো-কজের জবাব দেব।’’ শো-কজের চিঠি ঘিরে জেলা তৃণমূলের দুই প্রবীণ নেতার এই চাপান-উতোরের পাশাপাশি ওই ঘটনার পর সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চেও তাঁদের একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। গত ৭ জানুয়ারি এগরা-২ ব্লক কৃষি মেলার উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন শিশির। ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন বিধায়ক সমরেশও। সেদিন মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিশির ছিলেন না। তবে হাজির ছিলেন সমরেশ। এরপর বৃহস্পতিবার এগরা ঝাটুলাল হাইস্কুল ময়দানে মহকুমা কৃষি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও সাংসদ এবং বিধায়ক আমন্ত্রিত ছিলেন। সেখানে দেখা গেল উল্টো চিত্র। অনুষ্ঠানে শিশির উপস্থিত থাকলেও গরহাজির ছিলেন সমরেশ। বার বার পরস্পরকে এড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা নজর এড়ায়নি এলাকার রাজনৈতিক মহলের।
মহকুমা কৃষি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিশিরবাবুকে এড়াতে সেখানে না যাওয়ার কথা কার্যত স্বীকারও করেছেন সমরেশ। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওখানে থাকলে শিশিরবাবু হয়তো থাকবেন না। এটা ভেবেই যাইনি।’’ আর জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘কৃষি মেলার উদ্বোধনে যাইনি কারণ, সেদিন অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম।’’