তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বসু নিজস্ব চিত্র
‘ডবল ইঞ্জিন’-এর নামে ভাঁওতা দিচ্ছে বিজেপি। তারা রেলকে যে ভাবে বিক্রি করেছে, ক্ষমতায় এলে ঠিক একই ভাবে রাজ্যকেও বিক্রি করে দেবে। বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোপ দেগে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বলেন, ‘‘বিজেপি-র নতুন ভাঁওতাবাজি হচ্ছে ডবল ইঞ্জিন। কিন্তু এই অপপ্রচার করে তারা ক্ষমতা দখল করতে পারবে না। বাংলার মানুষ জানেন বিজেপি রেলকে যে ভাবে বিক্রি করেছে, ক্ষমতায় এলে রাজ্যকেও বিক্রি করে দেবে। যে সব রাজ্যে ডবল ইঞ্জিনের সরকার রয়েছে, সেই সব রাজ্য থেকে বাংলা অনেক এগিয়ে রয়েছে। তাই বাংলার মানুষ ডবল ইঞ্জিনকে চায় না।’’
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করতে ডবল ইঞ্জিন সরকারের কথা বারবার বলছেন বিজেপি নেতারা। তাঁদের মতে, কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সরকার থাকলে উন্নয়ন অনেক বেশি হয়। যে হেতু দীর্ঘদিন ধরে বাংলায় কেন্দ্র বিরোধী সরকার রয়েছে, তাই বাংলা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। বিজেপি-র ওই দাবি অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল। যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই-ই একই দলের সরকার রয়েছে তার সঙ্গে বাংলার তুলনা টানেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-র কথা অনুসারে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাতে ডবল ইঞ্জিন সরকার রয়েছে। অথচ ওই রাজ্যগুলিতে বাংলার থেকে শিশু মৃত্যুর হার অনেক বেশি। বাংলায় যেখানে শিশু মৃত্যুর হার ২২ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে তা ৪৮ শতাংশ এবং ৪৩ শতাংশ। শুধু শিশু মৃত্যু নয়, মায়েদের মৃত্যুর হারও বাংলার থেকে ওই রাজ্যগুলিতে বেশি। ডবল ইঞ্জিন সরকার তা হলে কোনও কাজেই আসেনি বলতে হবে।’’
একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে বিজেপি নেতারা অনেক মিথ্যা কথা বলেন। পরিসংখ্যান থেকে তা স্পষ্ট। সরকারি হাসপাতালে বেডের সংখ্যার দিক থেকে মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ,কর্ণাটক অনেক পিছিয়ে বাংলার থেকে। অর্থাৎ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আমরা ডবল ইঞ্জিন সরকারকে বাই বাই বলেছি।’’ পাশাপাশি কলকাতা শহরের আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও বিজেপি-কে আক্রমণ করেন ব্রাত্য। বলেন, ‘‘কলকাতা ভারতের প্রাচীনতম শহরের মধ্যে একটি। প্রায় সমস্ত সমীক্ষা জানিয়েছে, কলকাতার আইন-শৃঙ্খলা সব থেকে ভাল, আর উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা সব থেকে খারাপ। মহিলাদের নিরাপত্তা দিক থেকেও ভারতের অন্যান্য শহরের মধ্যে কলকাতার অবস্থা ভাল।’’
অন্য দিকে, রাজ্যে মহিলাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের ঘটনায় বিজেপি-কে কাঠগড়ায় ব্রাত্য। পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘‘মহিলাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের সংখ্যাও অন্য রাজ্য থেকে বাংলায় কম। তবে আমরা চাই একটিও ঘটনা যাতে না ঘটে। কিন্তু এই ঘটনাগুলোর পিছনে রয়েছে বহিরাগতরা। ইদানীং বাইরে থেকে ঘন ঘন লোক আসছে বাংলায়। ফলে মহিলাদের উপর অত্যাচার বাড়ছে। বাইরে থেকে লোক আসা বন্ধ করলে, মহিলাদের উপর অত্যাচারও বন্ধ হবে।’’