তৃণমূলের তোপে সদ্য প্রাক্তন হয়ে যাওয়া সাংসদ। ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লুইজিনহো ফেলেইরো। সেই দিনই তাঁকে ‘সুখের পায়রা’ বলে আক্রমণ করলেন তৃণমূল মুখপাত্র তাপস রায়। আচমকাই দিল্লিতে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের কাছে গিয়ে ইস্তাফা দেন ফেলেইরো। সেই প্রসঙ্গেই তৃণমূল মুখপাত্র তাপস বলেন, ‘‘লুইজিনহো ফেলেইরো তাঁর রাজনৈতিক অস্তিত্বের প্রশ্নে তৃণমূলে এসেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। এ রকম সুখের পায়রারা শাসকদলের সঙ্গে থেকে নিজের অস্তিত্ব বাঁচাতে বকম বকম করে আসে। এটা সকলেই জানে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আগামী দিনে এই সমস্ত সুখের পায়রা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। ইতিমধ্যে অনেকেই আইডেন্টিফায়েড হয়ে গিয়েছেন। দলও ইতিমধ্যে সবটাই জানে।’’
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় বার জয়ের পর ভিন্রাজ্যে সংগঠন বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই অসম, গোয়া, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে তৃণমূলের সংগঠন বাড়ানোর দিকে মন দেন তিনি। সেই পর্যায়েই ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন ফেলেইরো। অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদানের ফল পান হাতেনাতে। ওই বছর অর্পিতা ঘোষের ছেড়ে দেওয়া আসনে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠায় তৃণমূল। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্যসভার সাংসদ হলেও গোয়া বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করবেন এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি ফেলেইরো।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভরাডুবির পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছিল সদ্য পদত্যাগী এই নেতার। এমনকি গোয়া তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতেও তাঁর বা তাঁর অনুগামীদের জায়গা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। পরবর্তী কালে তৃণমূলের কর্মসূচিতে আর সক্রিয় ভাবে দেখা যেত না ফেলেইরোকে। ফেলেইরোর পদত্যাগের ফলে রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদের সংখ্যা কমে দাঁড়াল ১২-য়। যদিও এই আসনে উপনির্বাচন হলে, বিধানসভায় বিধায়ক সংখ্যার হিসাবে তা সহজেই জিতে নেওয়ার কথা তৃণমূলেরই। কিন্তু পদত্যাগের দিনে তাঁকে ‘সুখের পায়রা’ বলে আক্রমণ করে বুঝিয়ে দেওয়া হল ফেলেইরোর এমন পদক্ষেপে সায় নেই দলের একাংশের। প্রকাশ্যে তাঁকে আক্রমণ করে সে কথাই বুঝিয়ে দিয়েছেন তাপস।