জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে মোদী-মমতার বৈঠকের সম্ভাবনা। ফাইল চিত্র।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের বকেয়া অর্থ রাজ্যকে বরাদ্দের দাবিতে আজ সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে সরব হলেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে রাজ্যে নদী ভাঙনের প্রসঙ্গ তুলে তাঁর কাছে সুরাহা দাবি করেন সুদীপ। জবাবে মোদী তাঁকে জানিয়েছেন, তিনি শীঘ্রই কলকাতা যাচ্ছেন। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর কলকাতায় জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে মোদী-মমতার বৈঠকে রাজ্যের বকেয়া বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার প্রাথমিক ইঙ্গিত আজ দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ লোকসভার অধিবেশন শুরু হতেই স্পিকারের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার পরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা মুলতুবি করে দেওয়া হয়। এ বারেও নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক সপ্তাহ আগেই অধিবেশনে ইতি টেনে দিল সরকার। এর পরে ঐতিহ্যমাফিক স্পিকারের ঘরে চা-চক্রে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী-সহ কিছু মন্ত্রী এবং বিভিন্ন সংসদীয় দলনেতারা। তৃণমূলের সুদীপ ছাড়াও ছিলেন কংগ্রেসের সনিয়া গান্ধী, অধীর চৌধুরী। ওই ঘরোয়া আলোচনাতেই সুদীপ পশ্চিমবঙ্গের দু’টি বিষয় তোলেন।
শুক্রবার চা-চক্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, রাজনাথ সিংহ, সনিয়া গান্ধী, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। নিজস্ব চিত্র
গত অগস্টে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলেন, একশো দিনের কাজে রাজ্যের বকেয়া পাওনার পরিমাণ ৬৫৬১ কোটি টাকা। যা এখন ৭৫০০ কোটি টাকায় পৌঁছে গিয়েছে বলে রাজ্যের শাসক দলের দাবি। মঙ্গলবার আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া পাওনার পরিমাণ ৫৪৫৩ কোটি টাকা। অন্য দিকে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে সম্প্রতি ভয়াবহ নদী ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে অনেক বাড়ি। জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমানের বাড়ি শমসেরগঞ্জেই। তাঁর কথায়, “ভাঙন রোধে প্রচুর অর্থের দরকার। রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। সুতি, শমসেরগঞ্জ ও ফরাক্কার বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েক হাজার পরিবার বাস করে নদীর পাড়ে। নদী আগে ছিল ৫-৭ কিলোমিটার দূরে। আজ তা এসেছে
বাড়ির দোরে। তার ফলেই এই সর্বনাশা পরিস্থিতি। কেন্দ্রীয় সরকার ভাঙন রোধে এগিয়ে এলে হয়তো এই দিন দেখতে হতো না।”
এই দু’টি বিষয়ই আজ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন সুদীপ। পরে তিনি বলেন, “নদী ভাঙনের বিষয়টি নিয়ে আমি বলার পরে সনিয়া গান্ধীও সরব হন। তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে বলেন বাংলায় ভাঙন একটা বড় বিষয়। অধীরও তখন জানান, তাঁরা এ ব্যাপারে নোটিস দিয়েছিলেন।” সুদীপ আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সব শুনে বলেছেন, আমি তো কলকাতা যাচ্ছি। পাশ থেকে রাজনাথ সিংহ তখন বলেন, কলকাতায় তো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।”