নিয়োগ দুর্নীতিতে শুভেন্দু অধিকারী যুক্ত বলে অভিযোগ করলেন কুণাল ঘোষ। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত শুভেন্দু অধিকারী! রবিবার এমনই অভিযোগ করেছেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে বিরোধী দলনেতাকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেওয়া হোক, এমন দাবিই করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র। কুণালের অভিযোগের পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সিবিআই এবং ইডির তদন্তে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার হয়েছেন। গ্রেফতারের তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্নীতি নিয়ে বাংলার শাসকদলকে রোজই নিশানা করছে বিরোধীরা। এই আবহে এ বার নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে শুভেন্দু জড়িত বলে দাবি করলেন কুণাল।
সম্প্রতি গ্রুপ সি পদে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। চাকরি বাতিলের সেই নথি দেখিয়ে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন কুণাল। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল বলেছেন, ‘‘১৫০ জনকে চাকরি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, নির্দেশে এবং ব্যবস্থাপনায় ১৫০ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৫৫ জনের চাকরি চলে গিয়েছে। আদালতের রায়ে যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৫৫ জন শুভেন্দুর এই ১৫০ জনের তালিকায় রয়েছেন।’’ এই ৫৫ জনের নামের তালিকা প্রকাশও করেছেন কুণাল।
এই প্রসঙ্গে কুণাল আরও জানিয়েছেন, ওই ৫৫ জনের মধ্যে তালিকায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি, কাঁথি, ভূপতিনগর, রামনগর, পটাশপুরের প্রার্থী। কুণালের অভিযোগ, শুভেন্দুর সুপারিশেই তাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘চাকরি দেওয়ার খেলায় শুভেন্দু যুক্ত ছিলেন। এই ৫৫ জন এবং শুভেন্দুকে অবিলম্বে তদন্তের আওতায় আনা হোক। তাঁদের চাকরি কে দিল? কী ভাবে দিল, তদন্তের দাবি করছি।’’ তৃণমূল নেতার আরও দাবি, ওই ৫৫ জনকে ধরে ধরে শুভেন্দুর মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হোক।
এই তালিকাই প্রকাশ্যে এনেছেন কুণাল ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
কুণালের দাবি, শুভেন্দুর এক ‘ঘনিষ্ঠ’-এরও চাকরি গিয়েছে। তাঁর নামও প্রকাশ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘চাকরি বাতিলের তালিকায় ৫৭৯ নম্বরে রয়েছে সঞ্জীব সুকুলের নাম। নিজেকে শুক্লা বলে পরিচয় দেন। সঞ্জীব কে? শুভেন্দুর দক্ষিণহস্ত। গোটা মেদিনীপুর জানে কে শুভেন্দুর বিভিন্ন কাজ করেন।’’ এর পরই কুণালের প্রশ্ন, ‘‘সঞ্জীবকে কে চাকরি দিয়েছিল? তদন্ত করা হোক।’’ নিয়োগ দুর্নীতিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কেন গ্রেফতার করা হবে না, এই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে দিলীপের বাড়ির দলিল উদ্ধারের খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। তার পরই দিলীপকে কেন গ্রেফতার করা হবে না, এই নিয়ে সরব হয় জোড়াফুল শিবির। রবিবার আবার সেই প্রসঙ্গ টানলেন কুণাল।
তৃণমূল নেতার এই দাবির পাল্টা মুখ খুলেছেন বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তিনি বলেছেন, ‘‘চোরের মায়ের বড় গলা। যারা নিজেরা চোর, তাদের কোনও অভিযোগের জবাব দেব না।’’ তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শুভেন্দুর বক্তব্য জানা যায়নি।