সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, আগামী মঙ্গলবার তাঁদের মামলার শুনানি হচ্ছে না। অর্থবর্ষ পার করে শুনানির নতুন ‘সম্ভাব্য দিন’ ধার্য করা হয়েছে। — ফাইল চিত্র।
তারিখের পর তারিখ! বিজেপির পূর্বাভাস ভেস্তে গেল। সুপ্রিম কোর্টে আবার পিছিয়ে গেল ইডির বিরুদ্ধে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলার শুনানি। ফলে আপাতত শীর্ষ আদালতের সুরক্ষাকবচ অগ্রাহ্য করে অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না ইডি। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, আগামী মঙ্গলবার তাঁদের মামলার শুনানি হচ্ছে না। অর্থবর্ষ পার করে শুনানির নতুন ‘সম্ভাব্য দিন’ ধার্য করা হয়েছে। আগামী ৫ এপ্রিল শুনানির জন্য মামলাটি উঠতে পারে শীর্ষ আদালতে।
গত বছর নভেম্বরে তিনটি তারিখ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তার মধ্যে ১২ ডিসেম্বর অর্থাৎ, বিরোধী দলনেতার প্রথম দেওয়া তারিখে সুপ্রিম কোর্টে অভিষেকের মামলার শুনানি ছিল। কিন্তু সে দিন এই মামলার শুনানি হয়নি। পরে কলকাতার হাজরার সভা থেকে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘আগামী ১৩ জানুয়ারির মধ্যে ধেড়ে ইঁদুর ধরা পড়বে। ১২ ডিসেম্বরটা ১৩ জানুয়ারি হবে। কিন্তু ১৪ ফেব্রুয়ারি হবে না।’’ কিন্তু এত দিনেও তার প্রতিফলন দেখা গেল না। নন্দীগ্রামের বিধায়কের নতুন তারিখের মেয়াদ শেষের পরেও পিছিয়ে চলল অভিষেকের মামলার শুনানি। যদিও শুভেন্দুকে এ নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। তবে ১৭ ফেব্রুয়ারি শুনানি না হওয়ার পরে রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশ মনে করেছিলেন, ফেব্রুয়ারিতে না হলেও, অন্তত মার্চে মামলাটির কিছু অগ্রগতি লক্ষ করা যাবে। কিন্তু বাস্তবে মার্চ ছাড়িয়ে এপ্রিলে চলে গেল মামলাটি।
গত বছর মে মাসে কয়লা পাচার মামলায় দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্ট যান অভিষেক। ওই বছর ১৭ মে তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেয় শীর্ষ আদালত। এর পরে মামলাটি বেশ কয়েক বার শুনানির জন্য ওঠে। গত বছর ১ নভেম্বর মামলাটি শেষ বার শুনানির জন্য উঠেছিল। তার পর থেকে মামলাটি একাধিক বার শুনানির তালিকায় এলেও, শুনানি না হয়েই বার বার পিছিয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট বলছে, গত ৫ মাসে ৭ বার পিছিয়েছে এই মামলাটি। এই মামলার সঙ্গে যুক্ত এক আইনজীবী মনে করছেন, কোনও মামলার শুনানি কবে হবে তা নিয়ে আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। মামলার দিনবদল নিয়ে বাদী বা বিবাদী পক্ষরা শুধুমাত্র অনুরোধ করতে পারে। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বের উপরও শুনানি নির্ভর করে। তাঁর মতে, অভিষেকের যে আর্জি ছিল তা শুনেই শীর্ষ আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে। তা ছাড়া তিনি আদালতের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন।
শুনানি পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের এক আইনজীবীর বক্তব্য, এই সব মামলার ক্ষেত্রে তদন্তের অগ্রগতি দেখার প্রয়োজন রয়েছে। তবে সাধারণ চোখে দেখলে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কোনও তদন্তকারী সংস্থা কাউকে গ্রেফতার করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে ইডি প্রথমে চেয়েছিল অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে। তারা তা করতে পেরেছে। আর অভিষেক চেয়েছিল আইনি রক্ষাকবচ। তিনি তা পেয়েছেন। অর্থাৎ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দু’পক্ষেরই আবেদন কার্যকর হয়েছে। এ বার এর বাইরে গিয়ে ইডি যদি এখন নতুন কোনও পদক্ষেপ করতে চায় তবে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত শুনানির আর্জি জানাতে হবে। তেমন কিছু হয়নি মানে বুঝতে হবে, এই মামলায় ইডির এখনই কোনও তাড়াহুড়ো নেই।