১৩ মার্চ অর্থাৎ, সোমবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অনুপম খের। তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
শান্তিনিকেতনে একটি আলোচনাসভায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর পরেই শুরু হয়েছে শোরগোল। তবে অভিনেতা অনুপম খের অনড়। জানালেন তিনি যাবেনই। স্পষ্ট করে বলে দিলেন, ‘‘কোই মাই কা লাল আটকাতে পারবে না।’’ এমনকি এটাও বলেন যে, তাঁর মতো সিংহকে কোনও ইঁদুর আটকাতে পারবে না। তবে অনেকটা সময় নিজের পরিবারের কথা, কাশ্মীর থেকে উদ্বাস্তু হওয়ার কথাই বলেন অনুপম। আর সেই সময়ে কেঁদে ফেলেন বলিউড তারকা। কাঁদতে কাঁদতে বাংলা নিয়ে তাঁর চিন্তার কথাও বলে যান।
রবিবার কলকাতার জাদুঘরে একটি আলোচনা সভায় যোগ দেন বলিউড অভিনেতা অনুপম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ‘কাশ্মীর ফাইলস্’ ছবির পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। ওই ছবিতে একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রবীণ অভিনেতা অনুপম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ এবং সমর্থক বলে পরিচিত চলচ্চিত্র জগতের ওই দুই ব্যক্তিত্ব। বিবেক জানিয়ে দেন তাঁর পরের ছবি ‘দিল্লি ফাইলস’-এ বাংলার ফাইল খুলতে চান তিনি। বলেন ‘‘১৯৪৬ সালের দাঙ্গা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমাকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে আমার টিম এসেছিল সাক্ষাৎকার নিতে। তাদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি।’’ উল্লেখ্য, বিবেকের ছবি ‘বুদ্ধ ইন আ ট্র্যাফিক জ্যাম’ নিয়েও এক সময় হুলুস্থুল হয়েছিল কলকাতার একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। অন্য দিকে, অনুপম জানান, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আলোচনায় সভায় তাঁকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। শুনেছেন, এ নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। কিন্তু তিনি যাবেনই।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৩ মার্চ বিশ্বভারতীর লিপিকা অডিটোরিয়ামে ৫৭তম ‘লেকচার সিরিজ’ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেখানে বক্তৃতা করতে পারেন মোদী-ঘনিষ্ঠ এই অভিনেতা। এই খবর সামনে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। শান্তিনিকেতনের পড়ুয়া ওবং প্রবীণ আশ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সময়ে রাজনীতির রং লাগানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘ব্যর্থতার ক্ষমতা’— আলোচনার এই শীর্ষক নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং আশ্রমিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, নামেই পরিষ্কার যে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক আলোচনা হবে। এবং সেটা অভিপ্রেত নয়।
কখনও ‘কালীপুজোর ধারণা’ শীর্ষক বক্তব্যের আয়োজন, কখনও আবার এনআরসি এবং সিএএ – এর পক্ষে আলোচনাসভা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে বিশ্বভারতীতে। ওই সব আলোচনা সভাতেই বিজেপি-ঘনিষ্ঠদের দেখা গিয়েছে। অনুপমকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়েও শুরু হয়ছে শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি নিয়ে তরজা। এক সময় শোনা যাচ্ছিল, আলোচনাসভায় অনলাইনে যোগ দেবেন তিনি। কিন্তু অনুপম নিজেই জানালেন তিনি সশরীরেই যাবেন বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে।
রবিবার আলোচনা সভার বড় অংশ জুড়েই ছিল কাশ্মীরের কথা। সঙ্গে কলকাতাও। কারণ, বিষয় ছিল ‘কাশ্মীর থেকে কলকাতার ঐতিহ্য’। এ ছাড়াও বক্তা ছিলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। বক্তা হিসাবে নাম ছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও। তবে স্বপন, বিবেক, অনুপমের বক্তৃতা শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত এসে পৌঁছননি শুভেন্দু।