কাকে ভোট দিলেন দিব্যেন্দু?
তৃণমূলের চার সাংসদ দিল্লিতে ভোট দিয়েছেন। মথুরাপুরের চৌধুরীমোহন জাটুয়া, আসানসোলের শত্রুঘ্ন সিন্হা এবং অধিকারী পিতা-পুত্র— কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এবং তমলুকের দিব্যেন্দু অধিকারী। তবে চর্চা তাঁদের নিয়েই। দলেই অভিযোগ রয়েছে, তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে এখন বিজেপির কাছাকাছি বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পিতা ও ভ্রাতা। সে কারণেই নাকি তাঁরা কলকাতার বদলে দিল্লিতে সংসদ ভবনে গিয়ে ভোট দিয়েছেন। কোনও সাংসদকে কলকাতায় ভোট দিতে হলে বিষয়টি আগে থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হয়। যদিও দুই অধিকারীর দাবি, কলকাতায় ভোট দেওয়ার জন্য তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে আগাম জানাতে ভুলে গিয়েছিলেন। একইসঙ্গে দলের তরফেও তাঁদের কলকাতায় ভোট দেওয়ার কথা বলা হয়নি বলেও দাবি করেছেন দিব্যেন্দু।সোমবার ভোট দেওয়ার পর শিশির জানিয়েছিলেন, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দই তাঁর পছন্দ। বাবার মতো ছেলে দিব্যেন্দুও দাবি করেছেন, তাঁরা যে দলের সাংসদ সেই দলের নির্দেশ মতো প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছেন। তৃণমূল অবশ্য এই উত্তর শুনে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘দলবিরোধী আইন সম্পর্কে সবটা জানেন বলেই ওঁরা এমন বলছেন। আসলে দু’জনেই দু’নৌকায় পা দিয়ে চলছেন। বিজেপির সঙ্গে আছেন বলার সাহস নেই।’’
তবে সে সবের সম্ভাবনা নাকচ করে দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যিনি যোগ্য তিনিই জিতবেন। দলের কথাটাও মাথায় রাখতে হয়। নিশ্চয়ই আমার মাথায় আছে। আমি জানতাম না আমায় দিল্লি এসে ভোট দিতে হবে।’’ দলের সঙ্গে দূরত্ব যে তৈরি হয়েছে তা স্পষ্ট করেই দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘নীরবে এখনও দলের সঙ্গে রয়েছি। সক্রিয় ভাবে হয়তো নেই। আগামী দিনে রাজনীতি করব কি করব না সেটা পরের কথা।’’ একইসঙ্গে দলের প্রতি অনুযোগও জানিয়েছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘একজন সাংসদ হিসাবে আমার কোনও অধিকার নেই। জেলাশাসক থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার সকলেই আমাদের এড়িয়ে চলছেন। এর কারণটার ব্যাখ্যা তাঁরাই ভাল করে বলতে পারবেন। আর আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই তাঁর বিচক্ষণতার মধ্য দিয়ে বাংলায় যাতে গণতন্ত্র রক্ষিত হয় তার ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করবেন।’’
কাকে ভোট দিলেন? কোনও প্রার্থীর নাম উচ্চারণ না করে দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘দল যতই আক্রমণ করুক, আমায় নীতি মেনে চলতে হবে। এমন মানুষকে ভোট দিয়েছি যাঁরা আগামী দিনে গণতান্ত্রিক পরিমণ্ডলের মধ্যে থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দল যদিও আমার সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করেনি। তবে আমি দলের সঙ্গে আছি। আগামী দিনে থাকব কি না সেটা ভবিষ্যৎ বলবে। দল যে হেতু সর্বসম্মত একটা প্রার্থী দিয়েছে সেই প্রার্থীকেই আমি ভোট দিয়েছি।’’