কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
যে সব চাকরিপ্রার্থীর নম্বর বাড়িয়ে বেআইনি ভাবে শিক্ষকপদে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের এই নির্দেশে তাঁর মানহানি হয়েছে বলে দাবি করলেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর কুহেলি ঘোষ। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন যে ৯৫২ জনের উত্তরপত্র তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে, তার মধ্যে রয়েছে কুহেলির নামও। এ বিষয়ে তিনি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
কুহেলির বক্তব্য, এত দিন নম্বর জানানো হয়নি। এখন কেন নাম প্রকাশ করা হল? সব রকম তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের এই কাউন্সিলরের দাবি, তাঁরা যখন পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তখন কত নম্বর পেয়েছেন তা জানানো হয়নি। ইন্টারভিউর নম্বরও জানানো হয়নি। কুহেলির আরও দাবি, প্রক্রিয়া মেনেই নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। তাই তিনি চাকরি করছেন। কুহেলির কথায়, “আমাকে কী নম্বর দেবে, তা তো আমি ঠিক করে দিইনি। পর্ষদ, পরীক্ষক এবং যিনি খাতা দেখেছেন তিনি ঠিক করেছেন। আমি তো কাউকে বলিনি আমার নম্বর বাড়িয়ে দিন। যাঁরা খাতার মূল্যায়ন করেছেন এখন তাঁরা দায়িত্ব নিক।” কুহেলি চান তদন্তের মাধ্যমে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসুক। কিন্তু তার বদলে যা হচ্ছে, তাতে তার মানহানি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। চলতি সপ্তাহেই মামলাটির শুনানি হতে পারে।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কুহেলি সোনারপুর চৌহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। এসএসসি-র ২০১৬ সালের নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষকপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে পরীক্ষা দিয়ে তিনি স্কুলে চাকরি করছেন বলেও জানান কুহেলি। স্কুল সূত্রের খবর, মাসখানেক আগে কুহেলির বিষয়ে শিক্ষা দফতর থেকে সমস্ত নথি তলব করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ওই স্কুলের আগে সোনারপুরের কোদালিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে (প্রাথমিক) শিক্ষকতা করতেন কুহেলি। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকতা ছেড়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। প্রসঙ্গত, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ৯৫২ জনের ওএমআর শিটের রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তাদের দাবি, এই ৯৫২ জনের ওএমআর শিটে কারচুপি করে চাকরি দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওএমআর শিটগুলি নিজেদের ওয়েবসাইটে এসএসসিকে প্রকাশ করার নির্দেশ দেন। সেই মতো ৯৫২ জনের ওএমআর শিট প্রকাশ করে এসএসসি।