আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কেটে যোগদান নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে তিন আদিবাসী মহিলার দণ্ডি কেটে তৃণমূলে যোগদান নিয়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। শাসকদলের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। ওই ঘটনার নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে তৃণমূলও। ওই আদিবাসী মহিলাদের যিনি দলে যোগদান করিয়েছেন, এ বার সেই প্রদীপ্তা চক্রবর্তীকে মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল। সেই জায়গায় দায়িত্ব পেলেন স্নেহলতা হেমব্রম। যিনি আগে দায়িত্বে ছিলেন, তিনি ছিলেন ব্রাহ্মণ। যিনি এলেন, তিনি আদিবাসী সম্প্রদায়ের।
এ প্রসঙ্গে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা নিন্দা শুরু করিনি। শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছি। শুভেন্দু অধিকারী বিরবাহা হাঁসদা সম্পর্কে যে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন, তার ক্ষমা চাওয়া তো দূর অস্ত, নিন্দাও কেউ করেননি! মহিলাদের সম্পর্কে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মা দুর্গা সম্পর্কে দিলীপ ঘোষ যে অপমানসূচক মন্তব্য করেছেন, আগে বিজেপি তার নিন্দা করুক। তার পর এই সব কথা বলবে।’’
শুক্রবার রাতে তিন আদিবাসী মহিলা-সহ চার জন বালুরঘাট শহরের কাঁঠালপাড়ায় তৃণমূল কার্যালয়ে যান। সেখানে দণ্ডি কেটে কার্যালয়ে ঢুকতে দেখা যায় ওই তিন মহিলাকে। পরে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন প্রদীপ্তা। সেই দৃশ্য প্রকাশ্যে আসতেই শাসক তৃণমূলকে আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিজেপি। এই ঘটনায় গোটা আদিবাসী সমাজকে কলঙ্কিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রদীপ্তাকে গ্রেফতারের দাবিতে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন দলের দুই বিধায়ক জুয়েল মুর্মু এবং বুধারাই টুডু। প্রদীপ্তার অবশ্য বক্তব্য ছিল, ওই মহিলারা স্বেচ্ছায় দণ্ডি কেটেছেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছিলেন রামনগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যেই তাঁর হয়ে ক্ষমা চান। এ বার আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কেটে যোগদান নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের নেতা বিপ্লব মিত্র স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দলনেত্রী মমতা এ ধরনের কাজকে সমর্থন করেন না। জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন বিপ্লব। তার পরেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল প্রদীপ্তাকে।