—ফাইল চিত্র।
সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু হাতে এত মামলার চাপ সামলাতেই পারছে না তারা। নতুন মামলাটি উত্তরবঙ্গের। তদন্তের জন্য কলকাতা থেকে নিত্য যাওয়া আসা করার দরকার। তা না হলে প্রয়োজন উত্তরবঙ্গেরই কোথাও একটা আস্তানা। শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সুবিধার জন্য এই সবই দেবে তারা। এ ব্যাপারে মুখ্যসচিবকে যে নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন, তার বেশির ভাগটাই পালন করা হবে।
রাজ্যের এই জবাবের নেপথ্যে অবশ্য রয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনা। গত সোমবার উত্তরবঙ্গের মহিলা ঋণদান সমিতির দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে বিচারপতি জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর কি আদালতের নির্দেশ মেনে চলার ইচ্ছে রয়েছে?
গত নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে কিছু নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মামলাটির তদন্তভার পাওয়া সিবিআইকে রসদজনিত কিছু সাহায্য করতে বলেছিলেন তিনি। সে ব্যাপারেই ছিল ওই প্রশ্ন।
বিচারপতি বলেছিলেন, সিবিআইয়ের কাজে সাহায্য করার জন্য ১০ জন পুলিশকর্মী, তদন্তের প্রয়োজনে উত্তরবঙ্গে যাতায়াতের জন্য গাড়ি এবং উত্তরবঙ্গে একটি বাড়ি প্রয়োজন, যে খানে অস্থায়ী ভাবে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারদের জন্য একটি অফিস হবে। কিন্তু গত ৩ নভেম্বর এবং ৭ ডিসেম্বর এ ব্যাপারে মুখ্যসচিবের দফতরে আদালতের নির্দেশ পৌঁছলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
বিষয়টি জানার পরই গত সোমবার বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যসচিবকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে হবে, তিনি এই ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করবেন কি না। তবে এর পরের দু’দিন বিচারপতি নিজে আদালতে আসেননি। পরে বৃহস্পতিবার তিনি আদালতে এলেও এই সংক্রান্ত মামলাটি তাঁর এজলাসে ওঠেনি। শুক্রবার মামলাটির শুনানি হয়। সেখানেই বিচারপতিকে রাজ্য জানিয়ে দেয়, মুখ্যসচিব আদালতের নির্দেশ পালন করবে।রাজ্য জানিয়েছে, সিবিআইকে গাড়ি, উত্তরবঙ্গে একটি বাড়ি এবং ডেপুটেশনে পুলিশও দেবেন মুখ্যসচিব।
সিবিআই ১০ জন পুলিশকর্মী চেয়েছিল। রাজ্য জানিয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে ৮জন পুলিশকর্মীকে ডেপুটেশনে দেবে তারা। এক সপ্তাহের গাড়ির বন্দোবস্তও করা হবে। তবে উত্তরবঙ্গে বাড়ি বা সিবিআইয়ের অস্থায়ী অফিস দিতে ২ মাস সময় দিতে হবে। দু’মাসের মধ্যে সেই ব্যবস্থাও করে দেবেন রাজ্যের মুখ্য সচিব।
প্রসঙ্গত, আলিপুরদুয়ার মহিলা ঋণদান সমবায় সমিতিতে ২১ হাজার ১৬৩ জন মোট ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বলে আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ ছিল হাই কোর্টে। টাকা জমা দেওয়ার সময় সমিতি জানিয়েছিল, ওই টাকা বাজারে ঋণ হিসাবে খাটানো হবে। কিন্তু পরে টাকা ফেরত পাওয়ার সময় হলে বিনিয়োগকারীরা জানতে পারেন, সমিতিই ‘বিলুপ্ত’ হয়ে গিয়েছে। তিন বছর ধরে তদন্ত করার পরেও সিআইডিও খুঁজে বার করতে পারেনি কাদের ওই টাকা ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। এর পরই গত অগস্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাই মামলার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।