শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির সিদ্ধান্তই বহাল রাখল বিকাশ ভবন। ফাইল চিত্র।
বদলির সিদ্ধান্ত বদল করতে আবেদন জানিয়েছিলেন বেশকিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা। কিন্তু শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল। তাতে বলা হয়েছে, কেবল পাঁচটি শর্তপূরণ হলেই বদলির সিদ্ধান্ত বদল করা হবে। নচেৎ সবাইকেই ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’ নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, এপ্রিল মাসে ৬০৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বিকাশ ভবন। শিক্ষক মহলের একাংশের অভিযোগ ছিল, কলকাতা, হাওড়া ও ব্যারাকপুর বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই)-এর অধীনে থাকা স্কুলগুলির অতিরিক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি করা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া মতো জেলায় বদলি করা হয়েছে তাঁদের। সেই বদলির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়, মামলা হয় সু্প্রিম কোর্টেও। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। পাশাপাশি, বেশকিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা বিকাশ ভবনে বদলির সিদ্ধান্ত বদলের জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনে শিক্ষক শিক্ষিকারা শারীরিক অসুস্থতা ও বাড়ির পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছিলেন।
সেই মর্মে কমিশনার বিকাশ ভবনে শুনানিও করেছিল। তাতেই বদলির সিদ্ধান্ত বদলের আশায় ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদল করেনি শিক্ষা দফতর। কলকাতা থেকেই ৩৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলি করা হয়েছে দূরবর্তী জেলা। এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখা উচিত ছিল। কারণ, এমন বহু শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা ক্যানসার আক্রান্ত, বুকে স্টেন্ট বসেছে। এমন শিক্ষিকাও রয়েছেন, বাড়িতে যাঁদের ছোট বাচ্চা রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কেন তার কোনও যুক্তি আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। তবে সরকার বদলির ক্ষেত্রে যে নীতি প্রণয়ন করতে চাইছে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা সেই নীতির বিরুদ্ধে নয়। কাছাকাছি বদলি দিলে সব শিক্ষকই বদলি নিতে রাজি হবেন বলেও আমরা জানি।’’ পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক তৃণমূল শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, ‘‘যাঁরা আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁদের শুনানি করে তাদের তথ্য যাচাই করা হয়েছিল। তথ্য যাচাইয়ের পর কয়েকজনের বদলির সিদ্ধান্ত বদল করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনুরোধ করব, শিক্ষা দফতরের কাছে যে যারা ক্যান্সারের মতো দুরাগ্যব্যাধিতে আক্রান্ত তাদের বিষয়টি সহানুভুতির সঙ্গে দেখা হোক। এ ছাড়াও যাদের অন্যান্য সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে যদি একটু কাছাকাছি কোনও স্কুলে বদলির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপকৃত হবেন।’’