ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করলেন স্বরাষ্ট্রসচিব। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক হল রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহলে। রবিবার ছুটির দিনে তড়িঘড়ি এক বৈঠক তলব করা হয় নবান্নের তরফে। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পেন সফরে গিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও সেই সফরে গিয়েছেন তাঁর সঙ্গে। তাই প্রশাসিক কাজকর্ম স্বরাষ্ট্রসচিবের হাতেই রয়েছে। সেই ক্ষমতাবলেই এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি।
নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠকে স্বরাষ্ট্রসচিব জানতে চান, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার মোকাবিলায় প্রশাসন কী কী পদক্ষেপ করেছে। বৈঠকে জেলাশাসকদের সঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। তাঁদের কাছেও জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা-ও বিস্তারিত জানতে চান স্বরাষ্ট্রসচিব।
নবান্ন সূত্রে খবর, জেলার প্রশাসনের প্রস্তুতির পাশাপাশি, বেশকিছু জেলার ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রসচিব ও স্বাস্থ্যসচিব। বেশ কিছু জেলার পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক তা-ও আলোচিত হয়েছে বৈঠকে। জানা গিয়েছে, হুগলি, নদিয়া, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে ডেঙ্গি এবং ম্যালিরিয়ার প্রকোপ রয়েছে যথেষ্ট। তাই বৈঠকে এই জেলাগুলির প্রতি বিশেষ নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার মোকাবিলার জন্য প্রত্যেক জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে জেলা প্রশাসনকে। আর পুরসভা এলাকায় ওয়ার্ড কমিটিগুলিকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। জেলাপ্রশাসনকেই তা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সবেতেই সজাগ দৃষ্টি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাশাসকদের।
পঞ্চায়েত হোক বা পুরসভা, এলাকার কোথাও যাতে জল দীর্ঘ দিন জমে না থাকে, বা সেখানে ডেঙ্গি ও ম্যালিরিয়ার মশা জন্মাতে না পারে সে দিকেও স্থানীয় প্রশাসনকে দায়িত্ব নিয়ে নজরদারি করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকায় এলাকায় ড্রোন দিয়ে সার্ভে করে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। সেই পরিকাঠামো তৈরি না থাকলে দ্রুততার সঙ্গে সেই আয়োজন করে দিতে হবে জেলাশাসকদের। কোথাও ফাঁকা জমি পড়ে থাকলে তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকেই। কোনও পুকুরে নোংরা বা কচুরিপানা জমতে দেওয়া যাবে না। যাবতীয় কাজকর্মের রিপোর্ট যথা সময়ে নবান্নকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
এক প্রশাসনিক আধিকারিকের কথায়, ‘‘উৎসবের মরসুমে যাতে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া বাংলার কোথাও যাতে প্রভাব ফেলতে না পারে সেই কারণেই আগে থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতেই এই বৈঠকে ডাক দেওয়া হয়েছিল। জেলাশাসকদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এর পরেও নবান্ন থেকে নজরদারি চলবে।’’