বাবুলের মন্তব্যকে পাত্তা দিতে নারাজ অধিকারী পরিবার। ফাইল চিত্র।
সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়েই বাবুল সুপ্রিয় টার্গেট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর পরিবারকে। মঙ্গলবার ইস্তফা দেওয়ার পরেই বাবুল বলেন,শুভেন্দুর উচিত তাঁর বাবা-ভাইকে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া। কিন্তু বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া এই গায়ক রাজনীতিকের কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ ছিল অধিকারী পরিবার। বাংলার রাজনীতিতে তাঁদের পরিচিতির কথা মাথায় রেখেই বাবুলের মতো রাজনীতিকের মন্তব্যকে বেশি আমল দিতে চাননি তাঁরা। বর্তমানে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। আর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই লোকসভা আসন কাঁথি ও তমলুক থেকে তৃণমূলের সাংসদ পিতা শিশির অধিকারী ও ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। এ বিষয়ে প্রথমে শুভেন্দু কোনও প্রতিক্রিয়া না দিতে চাইলেও, আসানসোলের দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বাবুলকে উদ্দেশ্য করে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘ওঁর সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’’
এরপরেই থেমে না থেকে নন্দীগ্রাম বিধায়ক বলেন, ‘‘আগে উনি বলুন পিসি-ভাইপোর সঙ্গে কী ডিলটা হয়েছে। আগে উনি ডিলটা প্রকাশ করুন, তারপর ওঁর সব কথার জবাব দেব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কাউকে না জানিয়ে তিনি পাল্টি খেয়েছেন। সেই চুক্তিটা কী? আগে সেই চুক্তি প্রকাশ করতে হবে। তারপর সব অভিযোগের জবাব দেব।’’ পদত্যাগের পর মঙ্গলবার বাবুল রাজনীতির বাইরে শুভেন্দুকে তাঁর বন্ধুসম বলেও বাবা ও ভাইয়ের কথা উল্লেখ করে খোঁচা দেন। বাবুল বলেছেন, ‘‘কয়েক মাস আগে পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিলেন। রাজনীতির বাইরে তিনি আমার বন্ধু। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে তাঁকেও তো আমার সম্পর্কে কঠোর বাক্য প্রয়োগ করতে হয়। তবে, শুভেন্দুর উচিত তাঁর বাবা ও ভাইকে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফার পরামর্শ দেওয়া। কারণ তাঁরা তো আর তৃণমূলে নেই।’’ শুভেন্দুর ‘বাবা ও ভাই’ অর্থাৎ কাঁথির সাংসদ শিশির এবং দিব্যেন্দুর কথাই বলতে চান বাবুল।
তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অবশ্য এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে আগ্রহ দেখাননি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে শিশির এগরায় অমিত শাহের সভায় হাজির থাকলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-তে যোগ দেননি। আবার তৃণমূলে আছেন, তেমন দাবিও করতে শোনা যায়নি। দিব্যেন্দু আবার বিজেপি-তে যোগ না দিলেও, হলদিয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন তৃণমূলের নির্দেশ উপেক্ষা করেই। যদিও, এখনও বিজেপি-তে যোগ না দিলেও তৃণমূলের সঙ্গে বিস্তর দূরত্ব তৈরি হয়েছে তাঁর। উল্লেখ্য, বাংলার রাজনীতিতে অধিকারী পরিবারের পরিচিতি কারও অজানা নয়। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তাঁরা বাংলার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।