ইডির তলবে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির ‘মানিক ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডল। — নিজস্ব ছবি।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে তৃতীয় বার হাজিরা দিয়ে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়লেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত তাপস মণ্ডল। ২০১৮ থেকে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে ডিএলএডে কত পড়ুয়া অফলাইন রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন, তা জানতেই তাপসকে ইডির তলব বলে জানা গিয়েছে। ঘণ্টাচারেক জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার পর তাপস ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁর কাছে নতুন কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাপস। তিনি ইডিকে তদন্তে সমস্ত সহযোগিতায় প্রস্তুত বলেও জানান ‘মানিক-ঘনিষ্ঠ’।
আগামী ২ নভেম্বর তাপসকে এই সংক্রান্ত নথি অফলাইন রেজিস্ট্রেশনের নথি নিয়ে হাজির হতে বলেছিল ইডি। কিন্তু পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের আগেই তাঁকে তলব করা হয়। সেই মতো তিনি শনিবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন। কিন্তু সমস্ত নথি এখনও তৈরি করা যায়নি বলে ইডিকে জানিয়েছেন তাপস, বলে সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রে দাবি, অফলাইন রেজিস্ট্রেশন বাবদ কয়েক কোটি টাকা মানিককে দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন কলেজে অনলাইনে পড়ুয়া ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর অফলাইনে ভর্তি নেওয়া হত। সেখানেই আসত টাকার প্রসঙ্গ। অফলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে পড়ুয়াপিছু পাঁচ হাজার টাকা করে নেওয়া হত। এমন কলেজের সংখ্যা ৬০০-এর বেশি। ইডি মনে করছে, এই বিপুল টাকা সরাসরি যেত মানিকের কাছে। তাপসের মহিষবাথানের অফিসে এই টাকা লেনদেন হত বলেও জানতে পেরেছে ইডি। ২০১৮ থেকে পর পর তিনটি শিক্ষাবর্ষে বহু পড়ুয়ারই অফলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল। কিন্তু ঠিক কত জন পড়ুয়াকে এ ভাবে টাকা দিতে হয়েছিল? ইডি সূত্রের খবর, সেই সংখ্যা জানতেই শনিবার তাপসকে তলব।
তিনটি বিএড কলেজ ছাড়াও, তাপসের সংস্থা ‘মিনার্ভা এডুকেশনাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ও ইডির আতশকাচের তলায় রয়েছে। এই সংস্থার অধীনে ছয় থেকে সাতটি পলিটেকনিক এবং আইটিআই কলেজ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। সূত্রের খবর, মানিক-পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যের সংস্থার সঙ্গে ৫৩০টি বেসরকারি বিইডি, ডিএলএড কলেজের মানোন্নয়নের জন্য যে ২.৬৪ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল, সেই সম্পর্কেও তাপসের কাছে জানতে চাইছে ইডি।