(বাঁ দিক থেকে) শুভেন্দু অধিকারী, বিচারপতি অমৃতা সিংহ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’য় আক্রান্তদের নিয়ে রাজভবনের সামনে ধর্না দিতে চান। এই আর্জি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। তার আগে আদালতে সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদন শুনে একটি মন্তব্য করেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। তিনি জানতে চান রাজভবন ছাড়া অন্য কোথাও কেন ধর্না দেওয়া যায় না? যার প্রেক্ষিতে মামলাকারী জানান, ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’য় নির্যাতিতদের নৈতিক সমর্থন দেওয়ার জন্যই তাঁরা রাজভবন বেছে নিয়েছেন। পাল্টা ধর্নার জন্য বিকল্প জায়গা ঠিক করতে বলে বিচারপতি সিংহের মন্তব্য, ‘‘শাসকদলের নেতা সেখানে কর্মসূচি করেছেন বলে আপনারাও করবেন, এটা যুক্তি হতে পারে না।’’
বুধবাই সমাজমাধ্যমে কলকাতা পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। সেখানেও তিনি টেনে এনেছেন অভিষেক-প্রসঙ্গ। তাঁর দাবি, যে স্থানে শাসকদলের নেতা ধর্না করার অনুমতি পেয়ে যান, সেই জায়গাতেই তাঁরা ধর্নার অনুমতি চাইলে শর্ত আরোপ করা হয়। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) শুভেন্দু নিশানা করেছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে। তিনি লেখেন, ‘‘১৯ জুন বিকেলের পর থেকে ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের সঙ্গে রাজভবন সংলগ্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ ধর্না বা অবস্থান-বিক্ষোভ করার অনুমতি চেয়েছিলাম কলকাতা পুলিশ কমিশনারের কাছে। যেখানে আঞ্চলিক দল তৃণমূলের নেতাদের গত ৫ অক্টোবর থেকে পাঁচ দিনের ধর্না দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।’’
এর পর তিনি লেখেন, ‘‘গত ১৩ জুন আমি প্রথম ইমেল পাঠিয়েছিলাম। কোনও প্রতিক্রিয়া না পেয়ে ১৬ জুন ‘রিমাইন্ডার’ পাঠিয়েছিলাম। তার পর গতকাল (মঙ্গলবার), আমি কিছু অব্যক্ত ‘প্রশাসনিক কারণে’ জায়গা পরিবর্তন করে ধর্না করার জন্য জয়েন্ট সিপির কাছ থেকে ‘শর্তাধীন প্রস্তাব’ পেয়েছি। কিন্তু আমি আপনার ‘শর্তাধীন প্রস্তাব’ গ্রহণ করছি না। কারণ এটি একেবারেই পক্ষপাতদুষ্ট। তা ছাড়া, দেশের দুটো রাজনৈতিক দলের জন্য দুটো নিয়ম থাকতে পারে না।’’
এর পরেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন শুভেন্দু। আগেই ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’য় আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সেখানে শাসকদলের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগ করেন তিনি। হিংসার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন রাজ্যপালও। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘শপথ নিয়ে বলছি, আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’ রাজভবন থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, রাজ্যপাল জানিয়েছেন রাজভবনে নির্যাতিতরা যে কোনও সময়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতে পারেন।