—প্রতীকী চিত্র।
স্বামী-স্ত্রী দু’জনে থ্যালাসেমিয়ার বাহক। দম্পতির দুই সন্তানই থ্যালাসেমিয়ায় ভুগে অল্প বয়সেই মারা যায়। কিন্তু, স্বামীর দাবি, বংশরক্ষা তো করতেই হবে। তাই স্ত্রীকে একাধিক পুরুষের সঙ্গে সহবাসে বাধ্য করেন তিনি। এমনই অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানা এলাকায়। স্বামীর ‘মদতে’ তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে— এমন অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে বিচার চাইতে গেলেন স্ত্রী। সেখানে স্বামী-সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
নির্যাতিতার দাবি, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেও ছেড়ে দেয় পুলিশ। স্বামীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েও নিরাপত্তার অভাববোধ করেন তিনি। মহিলার অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে গিয়েছেন অভিযুক্তেরা। তার পর থেকে তিনি আতঙ্কে রয়েছেন। আপাতত বাড়িছাড়া। বার বার আশ্রয় বদল করেছেন। শেষমেশ কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। বুধবারই তাঁর দায়ের করা মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
নির্যাতিতার দাবি, তাঁদের দু’টি সন্তান থ্যালাসেমিয়ায় মারা যাওয়ায় তিনি আর মা হতে চাননি। কিন্তু স্বামী ‘বংশরক্ষার’ তাগিদে তাঁর পরিচিত তিন জনের রক্তপরীক্ষা করান। প্রথমে তাঁদের মধ্যে এক জনের সঙ্গে তাঁকে সহবাস করতে বাধ্য করেন। কিন্তু, তিনি সন্তানসম্ভবা না-হওয়ায় আবার অন্য পুরুষকে দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করিয়েছেন স্বামী। একাধিক বার তিনি ধর্ষণের শিকার বলে অভিযোগ নির্যাতিতার।
গত এপ্রিল মাসে বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু সেই খবর পেয়ে অভিযুক্তেরা তাঁর উপর ‘হামলা’ চালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তার কয়েক দিনের মধ্যে তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু, রাজনৈতিক নেতারা প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান বলে অভিযোগ নির্যাতিতার। তিনি জানান, এ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে একটি অভিযোগপত্র জমা দেন। কিন্তু তার পরেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাই শেষমেশ বিচার চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। মঙ্গলবার বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে শুনানি হয়েছে। বুধবার আবার ওই মামলার শুনানি রয়েছে।