সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
উপাচার্য নিয়োগের মামলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবেদনে সাড়া দিল না সুপ্রিম কোর্ট। উপাচার্য নিয়োগের কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রী এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধি রাখতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য। এখনই এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, রাজ্যপালের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্তেও এখনই সুপ্রিম কোর্ট কোনও স্থগিতাদেশ দিচ্ছে না।
কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটির গঠনে বদল এনেছিল রাজ্য। আগের সার্চ কমিটির তিন সদস্যের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যপাল, সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি এবং রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি। পরে কমিটির সদস্য সংখ্যা করা হয় পাঁচ জন। বলা হয়, পাঁচ সদস্যের মধ্যে থাকবেন রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীর এক জন প্রতিনিধি, উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক জন প্রতিনিধি, উচ্চ শিক্ষা সংসদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর এক জন করে প্রতিনিধি। সার্চ কমিটিতে এই পরিবর্তন আনার জন্য একটি অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) পাশ করেছিল রাজ্য।
রাজ্যপালের আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তের দাবি ছিল, নতুন কমিটিতে রাজ্য সরকারের ৩ প্রতিনিধি থাকার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্য কোনও সিদ্ধান্ত নিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে তা সহজেই পাশ হয়ে যাবে ওই কমিটিতে। সে ক্ষেত্রে রাজ্যপালের মতামত উপেক্ষা করারও উপায় রয়েছে। এই মামলাতেই মুখ্যমন্ত্রী এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধি রাখতে চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানায় রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ জানিয়েছে, এখনই ওই বিষয়টি বিবেচনা করা হবে না।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে সদস্য মনোনয়নের জন্য রাজ্য, রাজ্যপাল এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)—তিন পক্ষকেই পাঁচটি নাম জানাতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সদস্যদের নাম জানার পর প্রত্যেক পক্ষ থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিয়ে তিন জনের সার্চ কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটিই স্থায়ী উপাচার্যের নাম প্রস্তাব করবে। আইনজীবীরা চাইলে এই কমিটির জন্য কোনও নাম দিতে পারেন বলেও মন্তব্য করে শীর্ষ আদালত।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগে আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। নবান্নের বক্তব্য ছিল, রাজ্যপাল যে পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করেছেন, তা বৈধ নয়। রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর বা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই উপাচার্য নিয়োগে একক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন আচার্য। যাকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত তীব্র হয়। রাজ্যপালের সিদ্ধান্তে আপাতত স্থগিতাদেশ দেওয়া হল না। অর্থাৎ, আপাতত রাজ্যপাল মনোনীত অস্থায়ী উপাচার্যেরা পদে বহাল থাকছেন।
অন্য দিকে, রাজ্যের অধ্যাদেশ মামলা নিয়ে আপাতত হাই কোর্টই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কারণ, মামলাটি সেখানে বিচারাধীন রয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।