—নিজস্ব চিত্র।
পথকুকুরকে কাস্তে ছুড়ে মেরেছিলেন এলাকার কোনও বাসিন্দা। কুকুরটির পিঠে আড়াআড়ি ভাবে সেটি গেঁথে গিয়েছিল। দিন কয়েক ধরে সে অবস্থাতেই ছোটাছুটি করছিল সাঁইথিয়ার ষাটপলসা গ্রামের ওই কুকুরটি। এলাকার কোনও বাসিন্দাই সেটিকে ধরতে পারেননি। ফলে যন্ত্রণায় কাতরালেও কুকুরটির পিঠ থেকে কাস্তেটি খোলা সম্ভব হয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে একটি পশুপ্রেমী সংস্থাকে খবর দেন এলাকাবাসীরা। সেই সংস্থার সদস্যরাই গিয়ে দেখেন, কাস্তেটি খুলে নিয়েছেন স্থানীয়েরা। তবে কাস্তের আঘাতে কুকুরটির পিঠে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। কুকুরটিকে সিউড়ির পশু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই সংস্থার সদস্যরা। তবে কী কারণে একটি কুকুরের উপর এ আচরণ তা নিয়ে অন্ধকারে এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের একাংশের মতে, মানবিকতা হারাচ্ছে সাঁইথিয়া!
বৃহস্পতিবার রাতে ষাটপলসা গ্রামের বাসিন্দারা ফোন করেছিলেন ‘হ্যান্ডস অব লভ’ নামে পশুপ্রেমী তথা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। তাঁদের ফোন পেয়ে শুক্রবার সকালে গ্রামে ছুটে যান ওই সংস্থার সদস্য বাপ্পাদিত্য সাহা। তিনি বলেন, ‘‘গত কাল রাতে ষাটপলসা গ্রামের এক বাসিন্দা আমাদের ফোন করে গোটা ঘটনাটা জানান। ওখানকার কোনও বাসিন্দাই নাকি কুকুরের পিঠ লক্ষ্য করে ধান কাটার কাস্তে ছুড়ে মেরেছিলেন। সেটি কোনও ভাবে কুকুরের পিঠে গেঁথে গিয়েছিল। গত কয়েক দিন ধরে কুকুরটি সে অবস্থায় ছোটাছুটি করছিল। আজ সকালে আমরা গ্রামে গিয়ে দেখি যে কুকুরের পিঠ থেকে ওই কাস্তেটি কেউ বার করে এনেছেন। কোনও রকমে কুকুরটিকে ধরা হয়েছে। সকালেই তাকে সিউড়িতে নিয়ে আসা হয়। এর পর এখানকার হাসপাতালে কুকুরটি ভর্তি করানো হয়েছে।’’
পথকুকুরের সঙ্গে এ আচরণে ক্ষুব্ধ ষাটপলসা গ্রামের বহু বাসিন্দা। তাঁদের মতে, এলাকার পথকুকুরদের উপর এ ধরনের অত্যাচার দিন দিন বাড়ছে। মানবিকতা হারাচ্ছেন সাঁইথিয়ার একাংশ। সারমিন রেজা নামে এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘সিউড়ি শহরে পথকুকুরদের উপর এ ধরনের অমানবিক অত্যাচার আগেও হয়েছে। কুকুরকে বিষ দিয়ে বা স্রেফ পিটিয়েই মেরে ফেলা হয়েছে। এটা নতুন কিছু নয়। তবে এই আচরণ কাঙ্খিত নয়। কারণ এরা তো অযথা মানুষকে আক্রমণ করে না। উল্টে মানুষই এদের অকারণে অত্যাচার করে। এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।’’