জোড়াফুল শিবিরে বিনয় তামাং। —নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ের রাজনীতিতে নয়া সমীকরণ। শুক্রবার তৃণমূলে যোগ দিলেন বিনয় তামাং। জিটিএ নির্বাচনের আগে বিনয় তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করলেন। প্রসঙ্গত, জিটিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন বিনয়। রাজ্যের দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে যোগ দিলেন বিনয় তামাং এবং কার্শিয়াঙের প্রাক্তন বিধায়ক রোহিত শর্মা। ব্রাত্য বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই দু’জন তৃণমূলে যোগ দিলেন। পাহাড়ের উন্নয়নই এঁদের লক্ষ্য।’’
শুক্রবার তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিনয় বলেন, ‘‘৬৪ দিন আগে আমি তৃণমূল থেকে পদত্যাগ করি। কিন্তু পরে মমতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি তৃণমূলে ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। মমতাকে আমি সর্বভারতীয় নেতা হিসেবে দেখতে চাই। মমতাকে আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। জাতীয় দলে যোগ দিয়ে উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন করব।’’ একই সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘মমতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই তৃণমূলে ফিরলাম। আমাদের মূল বিরোধী বিজেপি এবং তার শরিকরা। বার বার তারা আমাদের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের ললিপপ দেখিয়েছে। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দরকার নেই। দরকার পাহাড়ের প্রকৃত উন্নয়নের। আমরা বুঝতে পেরেছি, একমাত্র তৃণমূলের সঙ্গে থাকলেই আমাদের কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব।’’
বস্তুত, বিনয়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন আকস্মিক নয়। সম্প্রতি বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয় দেখা করেছিলেন। বিমল-বিনয় সাক্ষাতের পর থেকে পাহাড়ে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত মেলে। বিনয় তখন বলেছিলেন, পাহাড়ে এখন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা একটাই। যার নেতা গুরুং। দু’জনে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার বার্তাও দেন বিনয়। একই সঙ্গে কয়েকটি নতুন রাজ্য তৈরির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বেঁধেন বিজেপি-কে। তখন থেকেই তাঁর তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। সেই জল্পনা সত্যি হল শুক্রবার।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ধারণা, সামনেই জিটিএ নির্বাচন। বিমল গুরুং যে হেতু বর্তমানে শাসকদলের শীর্ষনেতৃত্বের ‘ঘনিষ্ঠ’, তাই তাঁর সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ না থাকলে পাহাড়ের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা হারাতেন বিনয়। যে কারণেই প্রথমে বিমলের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং তার পর তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে।