পুরনো দলেরই পাশে দাঁড়িয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
পুরনো দলের পাশে দাঁড়ালেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। গুজরাতের মোরবীতে সেতু ভাঙে পড়ার ঘটনায় হঠাৎই কলকাতার পোস্তার উড়ালপুল ভেঙে পড়ার প্রসঙ্গ টানতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তার জবাব দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তনী এবং বর্তমানে খাতায়কলমে বিজেপিতে থাকা শোভন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র জানিয়ে দিলেন, পোস্তার ব্রিজ ভাঙার দায় কোনও ভাবেই তৃণমূল সরকারের উপর বর্তায় না। তার কারণ ওই ব্রিজ তৃণমূল সরকার তৈরিই করেনি। শোভন বলেছেন, ‘‘ব্রিজের বরাত দেওয়া তো বটেই, তার কাজও শুরু হয়েছিল তৃণমূলের আগের সরকারের আমলেই। সেই প্রক্রিয়ায় যে অনিয়ম হয়েছিল, তার দায় আগের সরকারেরই।’’
গুজরাতের মোরবীতে পায়ে চলা সেতু ভেঙে নদীতে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। ৬ বছর আগে কলকাতার পোস্তাতেও বিবেকানন্দ সেতু ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল ২৭ জনের। শোভন বলেন, ‘‘ওই ঘটনা ২০১৬ সালের ৩১ মার্চে হলেও ওই ব্রিজ তৃণমূল সরকার তৈরি করেনি। তৃণমূল উত্তরাধিকার সূত্রে ওই ব্রিজের কাজের ভার পায়। তারা শুধু সেই কাজ শেষ করেছিল।’’
মঙ্গলবার নারদ মামলার শুনানিতে যোগ দিয়ে নগর দায়রা আদালতে সশরীরে হাজিরা দেন অভিযুক্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের নেতা ববি হাকিম, মদন মিত্ররাও। সেখানেই পোস্তা ব্রিজ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয় শোভনের কাছে। কারণ, ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ যে দিন ঘটনাটি ঘটে, তখন কলকাতার মেয়র ছিলেন তিনিই।
এখন গুজরাতের যে পরিস্থিতি সে দিন পশ্চিমবঙ্গেও সেই একই পরিস্থিতি ছিল। ২০১৬ সালে এই ঘটনার ঠিক চার দিন পর থেকেই ছিল পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘এটা ভগবানের বার্তা। কার হাতে আপনারা সরকার তুলে দিয়েছেন দেখুন! সেতু যেমন ভেঙে পড়েছে, সরকারও তেমনই ভেঙে পড়বে!’’ ঘটনাচক্রে মোরবীর ঘটনাটিও ঘটল বিধানসভা ভোটমুখী গুজরাতেই। যদিও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদীর পুরনো মন্তব্য প্রসঙ্গে একটি কথাও বলেননি। তবে তৃণমূলের বহু নেতাই মোদীর ‘অ্যাক্ট অফ গড’ মন্তব্যের জের টেনে মোরবীর ঘটনাটিকে ‘অ্যাক্ট অফ ফ্রড’ বলে অভিহিত করছেন। তবে এ ব্যাপারে শোভনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনিও মমতার নীতিই নেন। শোভন বলেন, ‘‘আমি মোরবীর ঘটনা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। খুবই দুঃখজনক বিষয়। তবে ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণের ভার যে পুর প্রশাসনের উপর ছিল তাঁদের নজর রাখা উচিত ছিল ব্রিজে কত জন উঠছেন, বা কারা নামছেন।’’
একই বিষয়ে মদন মিত্রকে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য সরাসরি কোনও জবাব দেননি। তবে মদন যা বলেন, তার সারমর্ম এই, তৃণমূলের বহু প্রকল্প মানুষ গ্রহণ করছে। তবে আর কিছু দিনের অপেক্ষা। ‘‘বল গড়াতে শুরু করেছে।’’