নিহত ছাত্রনেতার মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি
নিহত ছাত্রনেতা নিজেদের সংগঠনের সদস্য বলে দাবি করছে একাধিক রাজনৈতিক দল। সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আনিসের সঙ্গে তাঁর দলের যোগাযোগ ছিল। বিধানসভা নির্বাচনে আনিস সাহায্য করেছিলেন শাসকদলকে। শুধু তৃণমূল নেত্রী নন, এর আগে আনিসকে নিজেদের দলের ছাত্র সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বলে দাবি করেছেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। শনিবার সকালে আমতায় নিহত ছাত্রনেতার বাড়িতে যান ভাঙড়ের বিধায়ক। সেই সময় তিনি বলেন, ‘‘ও আমাদের সঙ্গেই ছিল। বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের হয়েই কাজ করেছে। তাঁকে সামনে রেখেই আমাদের ছাত্র সংগঠন তৈরি করার কথা ভাবা হয়েছিল।’’
আবার কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদ দাবি করেছে আনিস ছিলেন তাদের সংগঠনের সদস্য। ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদ দাবি করেছেন, ‘‘২০১৮ সালের ২৮ অগস্ট আনিস ছাত্র পরিষদে যোগদান করেছিলেন। তাঁর যোগদানের সেই ছবি আমাদের কাছে রয়েছে।’’ আবার সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের দামি আনিস ছিলেন তাদের সক্রিয় সদস্য। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যর দাবি, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চার নেতৃত্বে যে ব্রিগেড সমাবেশ হয়েছিল সেই সভামঞ্চে দেখা গিয়েছিল আনিসকে। তাই মুখ্যমন্ত্রী যে দাবি করেছেন, তা সম্পূর্ণ অসত্য। আনিস ছিলেন আমাদের সদস্য।’’
উল্লেখ্য, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র আনিসের মৃত্যু নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তাঁর মৃত্যুর তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজপথে নেমেছে একাধিক রাজনৈতিক সংগঠন। এনআরসি, সিএএ বিরোধী আন্দোলনে সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যেত আনিসকে। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু দাবিদাওয়া নিয়েও লাগাতার আন্দোলন করছিলেন তিনি। গত শুক্রবার রাতে বাড়ির সামনেই তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। আনিসের পরিবারের তরফে তাঁর বাবা সালেম খান হাওড়ার আমতা থানায় অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাতে পুলিশের পোশাক পরা কয়েকজন এসে 'গান পয়েন্টে' পরিবারের লোককে রেখে ছেলেকে উপরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সোমবার সকালে তাঁর বাড়িতে যান পঞ্চায়েত মন্ত্রী পুলক রায় ও আমতার স্থানীয় বিধায়ক সুকান্ত পাল। তারই মাঝে একের পর এক রাজনৈতিক দল আনিসকে তাদের দলের সদস্য বলে দাবি করতে শুরু করেছে।