জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল ছবি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দ্বিতীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট বুধবারই আদালতে জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সেই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, আগের চেয়ে বেশ ভাল আছেন জ্যোতিপ্রিয়। ফারাক রয়েছে এসএসকেএমের রিপোর্টের সঙ্গেও। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ জানিয়ে দিলেন, এ ভাবে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে জামিন পাবেন না জ্যোতিপ্রিয়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি জানিয়েছেন, এসএসকেএমের রিপোর্টে জ্যোতিপ্রিয়কে যতটা অসুস্থ দেখানো হয়েছে, কমান্ডের রিপোর্ট বলছে, তিনি ততটাও অসুস্থ নন! বরং দেখা যাচ্ছে, জ্যোতিপ্রিয়ের শারীরিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। এর পরেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে জামিন পাবেন না জ্যোতিপ্রিয়। চাইলে অন্য যুক্তিতে জামিনের আবেদন করতে পারেন তিনি।
গত সপ্তাহেই রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত জ্যোতিপ্রিয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টে সংশয় প্রকাশ করেছিল ইডি। নিজেদের পছন্দসই জায়গায় প্রাক্তন মন্ত্রীর নতুন করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে আর্জি জানিয়েছিল তারা। গত বুধবার আদালতে ইডির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী জ্যোতিপ্রিয়ের ২০২০ সাল এবং গত এপ্রিল মাসের ব্লাড সুগারের রিপোর্ট দেখিয়ে সওয়াল করেন, ২০২০ সালে জ্যোতিপ্রিয়ের রক্তে শর্করার গড় মাত্রা এখনকার তুলনায় অনেকটাই বেশি ছিল। এমনকি গত এপ্রিল মাসের রিপোর্টের থেকেও এখন রক্তে শর্করার মাত্রা কম। বেশি সুগার নিয়ে তিনি মন্ত্রিত্ব সামলেছিলেন। এখন সেই তুলনায় সুগারের মাত্রা অনেক কম। অথচ এখন বলা হচ্ছে শরীর খারাপ! এটা জামিন পাওয়ার দোহাই ছাড়া কিছু নয়। তার পরই আদালত জানিয়ে দেয়, ইডির দাবি মতো কমান্ড হাসপাতালেই হবে জ্যোতিপ্রিয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। পরীক্ষার সময় উপস্থিত থাকতে পারবেন ইডির আধিকারিক এবং প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষও। ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সেই রিপোর্ট আদালতে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয় তদন্তকারী সংস্থাকে।
প্রসঙ্গত, জ্যোতিপ্রিয় বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাত থেকে জামিন পেতে সম্প্রতি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। মামলায় জ্যোতিপ্রিয়ের আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, তাঁর মক্কেল সম্প্রতি জেলের মধ্যে বার বার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাঁর বুকে ব্যথা রয়েছে। কয়েক দিন আগে জরুরি চিকিৎসার জন্য তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছিল। এর পরেই জ্যোতিপ্রিয়ের স্বাস্থ্য রিপোর্ট তলব করে হাই কোর্ট।