Fever

Scrub Typhus Fever: উত্তরপ্রদেশের মারণ জ্বর হানা দিল এ রাজ্যেও, আক্রান্ত অন্তত সাত শিশু

অগস্ট মাসের শেষ দিক থেকেই স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্তের সংখ্যা নিঃশব্দে বাড়ছে বলে জানান এক চিকিৎসক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:৫৭
Share:

—প্রতীকী ছবি

করোনা কালে ডেঙ্গির সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে বাড়ছে স্ক্রাব টাইফাস। এ বার বাংলাতেও অন্তত সাত শিশু স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে খবর। আক্রান্তরা বিসি রায় এবং পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্‌থে ভর্তি। স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত এক শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়াই তাকে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রেখে চিকিৎসা করতে হয় বলে জানান চিকিৎসক সুমন পোদ্দার।

Advertisement

ট্রম্বিকুলিড মাইট জাতীয় পোকার কামড় থেকে স্ক্রাব টাইফাস ছড়ায়। মূলত বর্ষার মরসুমে ঝোপঝাড়ে এই পোকা থাকে। তাই শহরতলিতে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শিশুদের কানের পিছনে, কুঁচকি বা শরীরের ঢাকা অংশে এই পোকা বেশি কামড়ায়। খালি চোখে কামড়ের চিহ্ন খুব একটা বোঝার উপায় নেই। তাই এই মরসুমে টানা ৩-৪ দিন ধরে শিশুর জ্বর, গায়ে র‌্যাশ, বেশি জ্বরে খিঁচুনি, গা-হাত-পায়ে অসহ্য ব্যথা স্ক্রাব টাইফাসের উপসর্গ বলে জানান চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি। রোগীর রক্ত পরীক্ষা করে স্ক্রাব টাইফাস বোঝা যায়। সুমনের মতে,‘‘স্ক্রাব টাইফাসের পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ২৪ ঘন্টা লেগে যায়। তাই কোনও শিশু স্ক্রাব টাইফাসের উপসর্গ নিয়ে খুব অসুস্থ অবস্থায় এলে আমরা ডক্সিসাইক্লিন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করে দিচ্ছি।’’

অগস্ট মাসের শেষ দিক থেকেই স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্তের সংখ্যা নিঃশব্দে বাড়ছে বলে জানান এক চিকিৎসক। চলতি মাসে ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্‌থে পাঁচ শিশু স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। অগস্ট মাসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এই হাসপাতালে আনা হয় পাঁচ মাসের এক শিশুকে। জ্বরের প্রায় ১০ দিন পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসায় দেরির কারণে জীবনমরণ সমস্যা তৈরি হয়েছিল বলে জানান সুমন। এ ছাড়া স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত আরও এক শিশুর স্ক্রাব-এনসেফেলোপ্যাথি হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক ওই শিশুকে পিকুতে রেখে চিকিৎসা চালানো হয় বলে জানান সুমন।

Advertisement

প্রায় একই চিত্র শিশু চিকিৎসার সরকারি হাসপাতাল বিসি রায়েরও। ওই হাসপাতালের প্রিন্সিপাল চিকিৎসক দিলীপ পাল বলেন, ‘‘প্রতিদিনই বেশ কিছু শিশুকে স্ক্রাব টাইফাসের উপসর্গ-সহ হাসপাতালে আনছেন মা-বাবারা। প্রতিদিনই টেস্ট করে দেখছি আমরা। মাঝে মাঝে পজিটিভও হচ্ছে।’’ বর্তমানে ওই হাসপাতালে দুই শিশু স্ক্রাব টাইফাস নিয়ে ভর্তি বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

ইতিমধ্যেই স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে উত্তরপ্রদেশে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। ফিরোজাবাদ সহ উত্তর প্রদেশের একাধিক এলাকায় জ্বরের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রাজ্যের চিকিৎসকদের মতে শিশুর জ্বর এলে করোনা, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার সঙ্গে স্ক্রাব টাইফাসের সম্ভাবনাও এখন উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তা জানান, রাজ্যে কোনও বিশেষ এলাকায় এর বাড়বাড়ন্ত (ক্লাস্টার) হওয়ার কোনও খবর নেই এখনও।

সময় মত স্ক্রাব টাইফাসের চিকিৎসা শুরু হলে কয়েক দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু দেরিতে চিকিৎসা শুরু হলে তা মারাত্মক রূপ নিতে পারে। যকৃৎ, ফুসফুস, কিডনি থেকে মস্কিষ্কেও এই রোগ আক্রমণ চালাতে পারে বলে জানান এক চিকিৎসক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement