ভেলোরের খ্রিশ্চান মেডিক্যাল কলেজে। —ফাইল ছবি
রাজ্য থেকে ফি বছর চিকিৎসার জন্য বহু রোগী ভেলোর যান। কিন্তু রাজ্যে এত হাসপাতাল থাকতে তাঁরা দাক্ষিণাত্যে ভিড় জমান কেন? সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনে চলা মামলার শুনানিতে কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভেলোরে এত ভিড়ের উত্তর লুকিয়ে আছে, ওই হাসপাতালের বিলে।’’ তাই খ্রিশ্চান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করে সুস্থ হওয়া, রাজ্যের এক রোগীর চিকিৎসা বিলের ‘নমুনা’ পাঠানো হবে রাজ্যের সব বেসরকারি হাসপাতালে। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা বিকাশচন্দ্র মণ্ডলের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই স্বাস্থ্য কমিশনের এই সিদ্ধান্ত।
স্বাস্থ্য কমিশনে বিকাশ জানান, ব্যারাকপুরে এক বাইক দুর্ঘটনায় তাঁর পায়ে আঘাত লাগে। স্থানীয় দুই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং পরীক্ষা করান। পরে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ওই বেসরকারি হাসপাতালে ১০ দিনে ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা বিল হয়। তার মধ্যে শুধু পায়ের প্লাস্টার, ড্রেসিং, তুলো ইত্যাদিতেই খরচ হয় এক লক্ষ টাকা। অবশেষে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে পা বাদ দেওয়ার আশঙ্কার কথা শোনান। বিকাশ ভেলোর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। হাসপাতালে বন্ডে স্বাক্ষর করে সিএমসি-তে তিনি চিকিৎসার জন্য যান।
ভেলোরে ১৯ দিনে এক লক্ষ ১৯ হাজার টাকা বিল হয় বলে জানিয়েছেন বিকাশ। ক্ষতিগ্রস্থ পা-ও বাদ দিতে হয়নি। কলকাতার হাসপাতালে বিকাশের চিকিৎসায় খরচ খতিয়ে দেখে কমিশন। তাতে কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী ছাড় দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
এই মামলার শুনানিতেই কমিশন বাইপাসের ধারের অভিযুক্ত ওই হাসপাতালকে তাদের বিল পুনর্বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিকাশের ভেলোরের বিলটি রাজ্যের সব বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান। তাঁর মতে,‘‘রাজ্যে ভাল চিকিৎসক, উন্নত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও কেনও রোগীরা ভেলোর চলে যান? রাজ্যের সব বেসরকারি হাসপাতাল ভেলোরের বিল দেখে বুঝুক, তাদের খামতি কোথায় এবং সেই অনুযায়ী সংশোধন করুক।’’