জল থেকেই এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের নিজস্ব চিত্র।
কামারহাটিতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৭০ জনের বেশি। তার মধ্যে পাঁচ শিশুও রয়েছে। ইতিমধ্যেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই মহিলার। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সোমবার রাতে ন’জনকে ভর্তি করা হয়েছে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মঙ্গলবার বমি ও পেটের সমস্যা নিয়ে আরও অনেককে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। মূলত জল থেকেই এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সূত্রের খবর, কামারহাটি পুরসভার ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ডায়রিয়ার প্রকোপ ছড়িয়েছে। সামি আনসারি নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমার বোন ১ নম্বর ওয়ার্ডে থাকেন। সোমবার থেকে বমি ও পেটের সমস্যা শুরু হয়। ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। প্রথমে ভর্তি নিতে চায়নি হাসপাতাল। পরে ভর্তি নেওয়া হয়। জলের সমস্যার কারণেই ডায়রিয়া হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।’’
জল থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে মনে করছে পুরসভাও। কামারহাটি পুরসভার মুখ্য প্রশাসক গোপাল সাহা জানিয়েছেন, কেএমডিএ-এর জল প্রকল্প এবং কামারহাটি জুটমিলের পরিবাহিত জল থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, পুরসভার পক্ষ থেকে আক্রান্ত এলাকায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিশেধক দেওয়া হচ্ছে। এই পাঁচ ওয়ার্ডে পুরসভার সরবরাহ করা জল ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে বাসিন্দাদের। জলের নমুনা ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কামারহাটি পুরসভার মুখ্য প্রশাসকের বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য সহমত নন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘ডায়রিয়া হয়েছে বলে শোনা গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে এমন নিশ্চিত তথ্য নেই। আমি শুনেছি চেয়ারম্যান বলেছেন, জল থেকে হয়েছে। এটা চেয়ারম্যানকে দোষ দেব না। চেয়ারম্যান তো বিশেষজ্ঞ নন। উনি আবেগের বশে বলেছেন। এটা আমার গর্ব যে উনি নিজের ঘাড়ে দোষ নিয়েছেন। তবে আমি মানতে রাজি নই।’’ মদনের ব্যাখ্যা, ‘‘আমার নাতিরও ডিহাইড্রেশন হচ্ছে। বমি হচ্ছে। সে একটা সেভেন স্টারের মাটন বিরিয়ানি খেয়েছে। কোথা থেকে কী হয়েছে তা না জানলে বলা খুব মুশকিল।’’ কামারহাটি এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্প বসানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা পাড়ায় পাড়ায় মেডিক্যাল ক্যাম্প করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে গুজবে কান না দেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি অভিযোগ করেছেন সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।