রাজ্য-সহ প্রত্যেকটি জেলার কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে শাসক দলের শিক্ষা সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের। ছবি: সংগৃহীত।
এ বার স্কুল শিক্ষার ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কমিটি নিয়েও রাজনীতিকরণের অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। সোমবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে ৩৮তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার একটি নির্দেশিকা জারি হয়। সেই নির্দেশিকার সঙ্গে রাজ্য ও জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটরদের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ঘোষণার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে শাসক-বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কমিটি নিয়েও রাজনীতি করছে শাসক দল তৃণমূল। রাজ্য-সহ প্রত্যেকটি জেলার কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে শাসক দলের শিক্ষা সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের। তাদের আরও অভিযোগ সম্প্রতি বিদ্যালয় ক্রীড়া পরিচালনার নিয়ামক সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল ফর স্কুল গেমস অ্যান্ড স্পোর্টসের যে পরিচালন সমিতির নাম ঘোষিত হয়েছে তাতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন দফতরের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার। এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তরে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। তবে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এটাকে সরকারি কমিটি না বলে তৃণমূল শিক্ষা সেলের ও শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিধানসভার তৃণমূল নেতাদের পুনর্বাসন কমিটি বলা ভাল। এর মধ্যে অনেকে দাগি আসামী ও বিজেপি থেকে তৃণমূল এ যোগ দেওয়া লোকও আছে।’’ তবে এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র বলেছেন, ‘‘আগে এই ধরনের কমিটি গঠনের আগে শিক্ষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হত। এ বার তো এই ধরনের কোন বৈঠক হয়েছে বলে শুনিনি। তাই এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা উচিত হবে না।’’
আর পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা যতদূর জানি যোগ্যতার ভিত্তিতেই এই কমিটির সদস্যদের নির্বাচন করা হয়েছে। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি কেবল রাজ্য সরকারের সমালোচনায় করে এসেছে, তারা ইতিবাচক কোন কিছু দেখতে পান না। তাই এ ক্ষেত্রে সমস্যা তাদের, রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দফতরের নয়।’’ তবে যাবতীয় সমালোচনা কাটিয়ে শিক্ষা দপ্তর আপাতত এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সফল করতে চাইছে। কারণ গত দু’বছর করোনার জন্য স্কুল পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পুরোপুরি বন্ধ ছিল। যাবতীয় সমালোচনা উপেক্ষা করে ৩-২০ জানুয়ারির মধ্যে এই প্রতিযোগিতা সব সরকারি অনুমোদিত স্কুলকে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।