বহু গ্রাহকের আঙুলের ছাপ না মেলায় রেশন পাওয়া নিয়ে রেশন ডিলার ও গ্রাহকদের মধ্যে গোলমালের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। ছবি: সংগৃহীত।
রেশন তুলতে এ বার যাচাই করা হতে পারে চোখের মণি। বিষয়টি আজব মনে হলেও এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যে সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রস্তাব এসে পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য দফতরেরও। রাজ্য মন্ত্রিসভা এই বিষয়ে অনুমোদন দিলেই এই প্রক্রিয়া কার্যকর করা শুরু করে দেবে খাদ্য দফতর। বর্তমানে রেশন দোকানে রেশন তুলতে গেলে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে গ্রাহকের হাতের ছাপ মিলিয়ে পরিচিতি নিশ্চিত হওয়ার পরেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রেশন দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে আঙুলের ছাপ মিলিয়ে দেখে রেশন দেওয়ার রেওয়াজ হয়েছে গত কয়েক বছরে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও বিস্তর গরমিলের অভিযোগ ওঠে, বহু গ্রাহকের আঙুলের ছাপ না মেলায় রেশন পাওয়া নিয়ে রেশন ডিলার ও গ্রাহকদের মধ্যে গোলমালের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। এমন অভিযোগ যেমন খাদ্য দফতরে পৌঁছেছিল, তেমনি পৌঁছেছিল খাদ্য মন্ত্রকেও। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে বিকল্প পথ হিসেবে আঙুলের ছাপের বদলে চোখের মণি যাচাই করে রেশন দেওয়ার প্রস্তাব পাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও রাজ্য সরকার চাইলে মন্ত্রিসভায় পাশ করিয়ে নতুন এই পদ্ধতি শুরু করতে পারে রাজ্যগুলিতে। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে কয়েক দফায় আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি ইতিবাচক মনে হওয়ায় তা জানানো হয় খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকে। খাদ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, নতুন এই পদ্ধতি চালু হলে রেশন দোকানে ঝামেলা অনেকটাই কমানো যাবে। হাতের ছাপ না মেলায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল গ্রাহকদের মধ্যে। রেশন ডিলাররাও খাদ্য দফতরের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাই বিকল্প ভাবনা হিসাবে নতুন এই পন্থা অবলম্বন করার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। বর্তমানে রেশন পরিষেবার পথ সুগম করতে তিনটি আঙুলের বদলে পাঁচটি আঙুলের ছাপ বায়োমেট্রিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে সমস্যা খানিকটা মিটলেও, সেই সমস্যা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসা যায়নি। তাই চোখের মণি যাচাই করে নতুন এই প্রক্রিয়া চালু করতে চায় খাদ্য দফতর। কারণ, বিভিন্ন কাজে হাতের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে হাতের রেখা বহুলাংশে পরিবর্তিত হয়ে যায়। কিন্তু চোখের মণির কোনও বদল হয় না। তাই চোখের মণি যাচাই নিয়ে রেশন ডিলারদের কাজ করতে খুব একটা অসুবিধা হবে না। এমন ভাবনা থেকে দ্রুত এই বিষয়টি কার্যকর করতে চাইছে খাদ্য দফতর।