ভাইরাল ভিডিয়োতে এ ছবিই দেখা গিয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
বস্তায় বালির পরিবর্তে বস্তা ভরে চলছে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ। এ রকম একটি ভাইরাল ভিডিয়ো ঘিরে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে মালদহের ভূতনি চর এলাকায়। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় এ ভাবেই ভাঙন রোধের কাজ হচ্ছে। এ নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতর। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে বলে দাবি মালদহ জেলা প্রশাসনের।
সম্প্রতি ৭ কোটি টাকা ব্যয় করে মালদহের মানিকচকের ভূতনি চর এলাকায় ভাঙন রোধের কাজ করেছে রাজ্য সেচ দফতর। কিন্তু তার পরেও ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়নি। এক দিকে, রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে গঙ্গা। অন্য দিকে, চোখ রাঙাচ্ছে কোশি নদীও। মুহূর্তের মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি, ঘরবাড়ি থেকে বড় বড় গাছপালা। ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্কে প্রহর গুনছেন এলাকার বাসিন্দারা। এই আবহে একটি ভাইরাল ভিডিয়ো ঘিরে জেলা জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ওই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, গ্রামের বাসিন্দারা ভাঙন রোধের কাজে যে বালির বস্তা গঙ্গায় ফেলছেন, তার মধ্যে বালির পরিবর্তে বস্তার টুকরো পোরা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ ভাবেই ভূতনি চর এলাকায় চলছে ভাঙন রোধের কাজ। মন্টু মণ্ডল নামে একটি স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘বস্তার ভিতরে বস্তা ভরে নদী ভাঙন কখনও থামানো যাবে না। নেতা-মন্ত্রীদের কাছে বলছি, পাথর দিয়ে বা আরসিসি দিয়ে ভাল ভাবে কাজ করা হোক। ঠিকাদারেরা কোনও কাজ দেখেন না। কর্মীদের দিয়ে কাজ করিয়ে সব টাকার বিল তুলে নেন। চোখের সামনেই এ ভাবে লুটপাট চলছে।’’
ভাঙল রোধের কাজ নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ির দাবি, ‘‘মানুষের জীবন, সম্পত্তি নিয়ে এরা যে ভাবে নোংরামি শুরু করেছে, তা বরদাস্ত করা যায় না। চাকরি চুরি, পঞ্চায়েতের পুকুর খননের টাকা চুরির পর এখন সেচ দফতরের বালি চুরি করছে এরা।’’
এ অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন মালদহ জেলা তৃণমূলের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি। তিনি বলেন, ‘‘কিছু লোক দলকে বদনাম করার ষড়যন্ত্র করছে। কাজ পেয়েও সঠিক ভাবে কাজ করছে না। কেউ যদি এই ধরনের কাজ করে থাকে, তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।’’ একই সুর শোনা গিয়েছে জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়ার কণ্ঠে। তিনি বলেছেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসন পদক্ষেপ করবে।’’