যাদবপুরের হস্টেলে মৃত ছাত্রের বাড়িতে যাচ্ছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। প্রতীকী চিত্র।
যাদবপুরের মৃত ছাত্রের নদিয়ার বাড়িতে যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার তৃণমূলের টুইটারে (এক্স হ্যান্ডেল) জানানো হয়েছে, তাঁদের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল বুধবার প্রয়াত ছাত্রের বাড়িতে তাঁর মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাবে। প্রয়াত ছাত্রের বাড়ি নদিয়া জেলার বগুলায়। সেখানে গিয়ে তাঁর পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন শাসকদলের নেতারা।
স্বাধীনতা দিবসের দিন তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের উজ্জ্বল এক ছাত্রের মৃত্যু আমাদের শুধু মর্মাহতই করেনি, ক্ষুব্ধও করেছে। আগামী কাল আমাদের দলের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও যুব সংগঠনের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ শোকাহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। গভীর দুঃখের এই মুহূর্তে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য আমরা তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চাই।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় এক্স হ্যান্ডেলে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেদের অবস্থানও স্পষ্ট করে দিয়েছে শাসকদল। তারা লিখেছে, ‘‘ঐক্যে, দুঃখে এবং অটল সংকল্পে আমরা বলি: আর র্যাগিং নয়। আর কোনও কষ্ট নয়।’’ চলতি মাসের ১০ তারিখে যাদবপুরে ওই ছাত্রের মৃত্যুর পর প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ। সোমবার স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এক দলীয় অনুষ্ঠানে যোগদান করতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বলেন, ‘‘যারা ছেলেটাকে উপর থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে, তারা সব মার্ক্সবাদী। এরা কখনও বিজেপি, কখনও কংগ্রেস।’’ তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, ‘‘ওখানে কিছু আগমার্কা সিপিএম আছে। তারা ছেলেটার জামাকাপড় পর্যন্ত খুলে নিয়েছিল। ওখানে পুলিশ ঢুকতে দেয় না। সিসিটিভি লাগাতে দেয় না। র্যাগিং করে। যাদবপুর এখন আতঙ্কপুর। অনেক জায়গায় গেলেও, যাদবপুরে আমি যেতে চাই না।’’ প্রসঙ্গত, ছাত্রের মৃত্যুর পরেই ফোন তাঁর বাবার সঙ্গে কথাও বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাঁর কড়া প্রতিক্রিয়ার পরেই শাসকদলের মন্ত্রী-সাংসদদের নিয়ে তৈরি প্রতিনিধি দল যাচ্ছে বগুলায়।
যাদবপুরের হস্টেলে ছাত্রের মৃত্যু তদন্তে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। ওই মৃত ছাত্রর বাড়িতে যাওয়ার পর রাজ্য কমিশন জানিয়েছে, যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল ওই ছাত্রকে। পরিবারের দাবি, তাঁর গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছিল। নির্মম ভাবে মারধর করা হয়েছিল। সমকামী বলে দাবি করে একাধিক বার হেনস্থা করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে পুলিশ ঘটনায় অভিযুক্ত বেশ কিছু জনকে গ্রেফতার করেছে।