BJP

BJP: বিদ্রোহ দমন কোন পথে! ঘনিষ্ঠদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে সুকান্ত, কমিটি ঘোষণা স্থগিত

দলে বিদ্রোহের পরিবেশে নয়া কমিটি ঘোষণা স্থগিত। জানুয়ারির মধ্যে সব মণ্ডল কমিটি ঘোষণার কথা। কিন্তু তা হয়নি জেলা কমিটি ঘোষণা না হওয়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ১১:২১
Share:

সুকান্ত মজুমদার ও অমিতাভ চক্রবর্তী জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন। ফাইল চিত্র

কেন্দ্রীয় বিজেপি-র নির্দেশে রাজ্যে ১০ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত জেলা কমিটি তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। যুব, মহিলা-সহ সব মোর্চার রাজ্য কমিটি গঠনও ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। বিজেপি সূত্রে খবর, তা হয়েও গিয়েছে কিন্তু দলে চলা বিদ্রোহের পরিবেশে নতুন কমিটি ঘোষণা স্থগিত রেখে দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারির মধ্যে সব মণ্ডল কমিটি ঘোষণার কথা। কিন্তু তার কিছুই এগোয়নি জেলা কমিটি ঘোষণা না হওয়ায়। এ দিকে শুধু জেলা সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশেই যে ভাবে জেলায় জেলায় ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে তাতে রাজ্য বিজেপি রীতিমতো অস্বস্তিতে। দলবিরোধী বক্তব্যের জন্য জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে সাময়িক বরখাস্ত করেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না কি এতে নতুন করে আগুনে ঘি পড়েছে? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর ও সমাধান খুঁজতে মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক ডাকলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি সূত্রে খবর, ৬ নম্বর মুরলীধর লেনের এই বৈঠকে হাজির থাকতে পারেন সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। বাছাই রাজ্য নেতারা থাকতে পারেন ভর্চুয়াল মাধ্যমে।

Advertisement

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সব বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন। দীর্ঘ দিন কর্মীদের নিয়ে কোনও সভা করেননি মোদী। সামনেই উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোট। সেই সঙ্গে গোটা দেশেই কর্মীরা করোনাআবহে ঘরে বসে আছেন। এখন করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পরে দলীয় কর্মীদের আন্দোলনমুখী করাই মোদীর উদ্দেশ্য বলে জানা গিয়েছে। ‌মোদীর ম‌ঙ্গলবারের বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গ আলাদা করে কোনও বিশয় নয়। তবে জানা গিয়েছে, মোদীর বক্তব্য শেষ হলে‌ই বৈঠকে বসবেন সুকান্ত।

বিজেপি-র নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণার পরে পরেই জেলা সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশ করেন। নিয়ম অনুযায়ী জেলা সভাপতিরা রাজ্য নেতৃত্বের পরামর্শ মতো কমিটি তৈরি করে তা ঘোষণা করবেন। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, ৭০ শতাংশ জেলা সভাপতিই রাজনীতিতে নবীন। একই সঙ্গে এমন অভিযোগও ওঠে যে সব সম্প্রদায়ের সমান প্রতিনিধিত্ব নেই কমিটিতে। ৪২টি কমিটির মধ্যে ৩২টির শীর্ষে এমন সভাপতি বসানো হয়েছে যাঁদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাই শুধু কম নয়, তাঁদের নিয়ে জেলায় নানা গোষ্ঠী সংঘাত রয়েছে। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, অমিতাভ চক্রবর্তী ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতেই এমন কমিটি তৈরি করেছেন। এর পরেই বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়।

Advertisement

প্রথমে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন মতুয়া বিধায়করা। এর পরে বাঁকুড়া জেলার বিধায়করা। রাজ্য কমিটি থেকে বাদ যাওয়া জয়প্রকাশ, রীতেশ ছাড়াও সায়ন্তন বসু-সহ কয়েকজন বিদ্রোহে সামিল হন। নেতৃত্ব দেন বনগাঁর বিধায়ক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। প্রথমে কলকাতায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক ও পরে উত্তর ২৪ পরগনায় দু’টি সমাবেশ হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহেই পুরুলিয়ায় এবং হুগলিতে বিদ্রোহীদের কনভেনশন হওয়ার কথা। সেটা রুখতেই তড়িঘড়ি জয়প্রকাশ ও রীতেশকে প্রথমে শোকজের চিঠি এবং পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে কি না, তা নিয়ে গেরুয়া শিবির চিন্তিত। অতীতেও রাজ্য বিজেপি-তে অনেক ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখা গেলেও এ বার যে ভাবে তা নিচুস্তরে পৌঁছে গিয়েছে তা নিয়ে চিন্তিত বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারাও। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দল যখন উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভাল ফলের জন্য ঝাঁপাচ্ছে, তখন বাংলার বিষয়ে দিল্লির নেতারা হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। তবে যত তাড়াতাড়়ি সম্ভব বাংলার নেতৃত্বকেই রাজ্যের সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে হবে। ইতিমধ্যে তেমন নির্দেশ পেয়েছেন সুকান্ত, অমিতাভরা। আর তার পরেই তড়িঘড়ি মঙ্গলবারের বৈঠক বলে জানা গিয়েছে। এই বৈঠকেই চূড়ান্ত হতে পারে কবে এবং কী ভাবে জেলা কমিটি ঘোষণা করা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement